কালিয়াকৈরে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে শিক্ষার্থীর মৃত্যু, তদন্তে নতুন মোড়

নিজস্ব প্রতিবেদক
খোরশেদ আলম, কালিয়াকৈর (গাজীপুর)প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ১৭ই ডিসেম্বর ২০২৪ ০৭:৫৯ অপরাহ্ন
কালিয়াকৈরে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে শিক্ষার্থীর মৃত্যু, তদন্তে নতুন মোড়

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে তাজবির হোসেন শিহান (২৬) নামের এক শিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা ও ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত ছিনতাইকারী চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার ভোরে উপজেলার ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের হানিফ স্পিনিং মিলের সামনে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে।


নিহত তাজবির হোসেন শিহান উপজেলার মৌচাক জামতলা এলাকার বাসিন্দা তানভির হোসেন নান্নু মিয়ার ছেলে। তিনি ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটিতে অধ্যয়নরত ছিলেন এবং উত্তরার একটি কল সেন্টারে চাকরি করতেন।


ঘটনার পর নিহতের পিতা বাদী হয়ে কালিয়াকৈর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। তদন্তে মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে এবং তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ছিনতাই চক্রের ছয়জনকে শনাক্ত করে পুলিশ। মঙ্গলবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরে।


পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার ভোর ৫টার দিকে শিহান অফিসে যাওয়ার পথে হানিফ স্পিনিং মিলের সামনে ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েন। তারা তাকে হাটুতে ছুরিকাঘাত করে মোবাইল ফোন, স্টুডেন্ট কার্ড, ভিসা কার্ডসহ মানিব্যাগ ও হাতে থাকা ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। ছুরিকাঘাতের ফলে ঘটনাস্থলেই শিহানের মৃত্যু হয়।


গ্রেপ্তারকৃত ছিনতাইকারীরা হলো:

১. ময়মনসিংহ ধোবাউরা উপজেলার আমগাছীহান্দা গ্রামের হালিমউদ্দিন সরওয়ার হোসেন (২৮), তিনি তাকওয়া পরিবহনের চালক।

২. কুড়িগ্রাম রৌমারি উপজেলার কাশিয়াবাড়ি গ্রামের নাজিম উদ্দিন (৩৫), তিনি সিএনজি চালক।

৩. কুড়িগ্রাম ওলিপুর থানার মধুপুর গ্রামের ফুল ইসলাম (৪২), সিএনজি চালক।

৪. লক্ষ্মীপুর সদরের জামেরতলী গ্রামের জুয়েল (২৪), তিনি আজমেরি বাসের হেলপার।

৫. জয়পুরহাটের মোহনপুর গ্রামের মোঃ মিলন (২৭), তিনি তাকওয়া বাসের স্টাফ।

৬. ভোলার চরফ্যাশনের সুলতান বয়াতির ছেলে আনোয়ার হোসেন (৩৫), তিনি চায়ের দোকানদার এবং মোবাইল চোরাই কারবারি।


পুলিশ আরও জানায়, প্রথমে চোরাই মোবাইলের কারবারি আনোয়ার হোসেনের কাছ থেকে নিহতের মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে গ্রেপ্তার করে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের শনাক্ত করা হয়। এরপর সোমবার রাতে সালনা, কোনাবাড়ি, বাসন ও টঙ্গীতে একাধিক অভিযান চালিয়ে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়।


এ বিষয়ে পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেন, “তদন্তের ভিত্তিতে আমরা মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে কাজ শুরু করি। পরে ছিনতাইকারী চক্রের ছয়জনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হই। এ ঘটনায় আরও কেউ জড়িত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”