আমদানি শুরু হওয়ায় কমছে পেঁয়াজের দাম

নিজস্ব প্রতিবেদক
গোলাম রব্বানী, উপজেলা প্রতিনিধি হিলি (দিনাজপুর)
প্রকাশিত: শুক্রবার ৪ঠা জুন ২০২১ ১২:৩৩ অপরাহ্ন
আমদানি শুরু হওয়ায় কমছে পেঁয়াজের দাম

ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি পাওয়ায় দীর্ঘ এক মাস চার দিন পর দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। ফলে হিলি স্হানীয় বাজারে মাত্র এক দিনের ব্যবধানে আমদানিকৃত ও দেশি পেঁয়াজের দাম কমেছে কেজিতে ১৫-১৮ টাকা। 



পেঁয়াজের দাম কমায় স্বস্তি ফিরেছে সাধারণ ক্রেতাদের মাঝে। পেঁয়াজের আমদানি অব্যাহত থাকলে প্রতি কেজি ২০-২৫ টাকায় নেমে আসবে বলে জানিয়েছেন আমদানিকারকরা।



শুক্রবার (০৪ জুন) বাংলাহিলি স্থানীয় বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আজ আমদানিকৃত ভারতীয় পেঁয়াজে প্রতি কেজি ৩৫ টাকা এবং দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৪৩ টাকা বিক্রি হচ্ছে।  



গতকাল বৃহস্পতিবার (০৩ জুন) বিকেলে ভারত থেকে চার ট্রাকে ৯৫ টন পেঁয়াজ হিলি বন্দরে আহমদ করা হয়। হিলি স্থলবন্দরের মেসার্স রাইয়ান ট্রেডার্স এসব পেঁয়াজ আমদানি করেছে এবং যার স্বত্বাধিকারী শহিদুল ইসলাম। আমদানি করা পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৩৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। 



হিলি বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা রফিকুল ইসলাম ও আশরাফ আলী বলেন, কয়েকদিন ধরে যে হারে পেঁয়াজের দাম বেড়েছিলো, তাতে আমাদের মতো খেটে খাওয়া মানুষকে চরম বিপাকে পড়তে হয়েছিলো।


বন্দরে পেঁয়াজ আমদানি শুরুর ফলে দাম কমেছে। দুদিন আগেও দেশি পেঁয়াজ ৬০ টাকা কিনেছিলাম; তা এখন ৪৩ টাকা বিক্রি হচ্ছে। ভারতীয় পেঁয়াজ ৪৮ টাকা কিনেছিলাম, তা এখন ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।



হিলি বাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী মোবারক হোসেন বলেন, ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি না থাকায় দীর্ঘদিন পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ ছিলো। যে কারনে বাজারে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পেয়েছিলো। 



পুনরায় হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হওয়ায় মাত্র এক দিনের ব্যবধানে স্হানীয় বাজারে পেঁয়াজের দাম  নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। প্রতি কেজিতে দাম কমেছে ১৫-১৮ টাকা।



তিনি আরও বলেন, আশাকরি আমদানি আরও বাড়বে এবং পেঁয়াজের দাম আরও কমবে। কয়েকদিনের মধ্যে পেঁয়াজের কেজি ২০-২৫ টাকায় নেমে আসবে। এক দিন আগেও ভারতীয় পেঁয়াজ প্রকারভেদে ৪৫-৪৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছিলাম। এখন তা ৩২-৩৫ টাকা বিক্রি করছি। 



দেশি পেঁয়াজ প্রকারভেদে যেখানে ৫৫-৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি করেছিলাম; তা এখন ৪০-৪২ টাকা বিক্রি করছি। দাম কমায় পেঁয়াজের বিক্রিও বেড়েছে।



হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজ আমদানিকারক মামুনুর রশীদ লেবু বলেন, দেশি কৃষকের উৎপাদিত পেঁয়াজের দাম নিশ্চিত করতে এবং কৃষকের ঘরে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ মজুত রয়েছে মর্মে আইপি (ইমপোর্ট পারমিট) দেওয়া বন্ধ করে দেয় মন্ত্রণালয়। 



এতে করে গত ২৯ এপ্রিল থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ হয়ে যায়। আমদানি বন্ধের ফলে দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম হু হু করে বেড়ে যায়। যে কারণে আইপি দেওয়া বন্ধ করা হয়েছিলো, প্রকৃতপক্ষে পেঁয়াজ কৃষকের ঘরে নেই; রয়েছে মজুতদারদের হাতে। ফলে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যায়। 



সামনে ঈদুল আজহায় পেঁয়াজের চাহিদা আরও বাড়বে। আমদানি শুরু হওয়ায় পেঁয়াজের সংকট কেটে গেছে। এক দিনে কেজিতে দাম কমেছে ১৫-১৮ টাকা। নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে বাজার। পেঁয়াজের আমদানি আরও বাড়বে। এতে করে ২০-২৫ টাকায় দেশের মানুষকে পেঁয়াজ খাওয়াতে পারবো আমরা।



তিনি বলেন, ইতোমধ্যে হিলি স্থলবন্দরের বিভিন্ন আমদানিকারক ৩৫ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির আইপি পেয়েছেন। সবার মালামাল ইতোমধ্যে লোডিং হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সব পেঁয়াজ দেশে চলে আসবে। এক সপ্তাহের মধ্যে পেঁয়াজের দাম ২০-২৫ টাকায় নেমে আসবে।



হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, আইপি (ইমপোর্ট পারমিট) না থাকায় গত ২৯ এপ্রিল থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ ছিলো। নতুন করে আইপি পাওয়ার ফলে বৃহস্পতিবার থেকে আমদানি শুরু হয়েছে। 



প্রথম দিনে চার ট্রাকে ৯৫ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। কাস্টমসের সব প্রক্রিয়া শেষে দ্রুত খালাস করে আমদানিকারকদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।