প্রকাশ: ২৫ মে ২০২৫, ২১:৫১
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগে ৩০ শতাংশ নারী কোটা বাতিলের সরকারি সিদ্ধান্তে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। সংগঠনটির মতে, এ সিদ্ধান্ত নারীর ক্ষমতায়নের পথ রুদ্ধ করবে এবং শিক্ষাক্ষেত্রে লিঙ্গ বৈষম্য আরও বাড়াবে। রোববার এক যৌথ বিবৃতিতে মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম ও সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু নারী কোটা বহাল রাখার দাবি জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়, গ্রামীণ ও পশ্চাৎপদ এলাকার বহু নারী এই কোটার সুযোগে শিক্ষকতা পেশায় প্রবেশ করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছিলেন। কোটা বাতিল হলে এসব নারীর শিক্ষাক্ষেত্রে প্রবেশ বাধাগ্রস্ত হবে, যা নারী শিক্ষার জন্য মারাত্মক হুমকি।
সংগঠনটির মতে, স্কুলে নারী শিক্ষকের উপস্থিতি শুধু পড়াশোনার জন্য নয়, বরং একটি নিরাপদ ও অনুকূল পরিবেশ তৈরিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বিশেষ করে নারী শিক্ষার্থীদের জন্য নারী শিক্ষকরা অনুপ্রেরণা ও সুরক্ষার প্রতীক।
বিবৃতিতে মহিলা পরিষদ অভিযোগ করে, একের পর এক নারী কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত সরকার নিজেরই ঘোষিত নারীর ক্ষমতায়ন নীতির পরিপন্থী। এমন আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত ভবিষ্যৎ প্রজন্মের নারী শিক্ষার্থীদের প্রতি অবিচার বলেও উল্লেখ করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ২২ মে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এক প্রজ্ঞাপন জারি করে এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নারী কোটা বাতিলের ঘোষণা দেয়। এই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, শিক্ষক নিয়োগের প্রবেশ পদে আর নারী কোটা থাকছে না।
এ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগের মতো শহরাঞ্চলের প্রতিষ্ঠানে ৪০ শতাংশ এবং মফস্বল অঞ্চলে ২০ শতাংশ নারী কোটা আর বহাল থাকছে না। আগে এই নিয়মে গড়ে ৩০ শতাংশ নারী শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া বাধ্যতামূলক ছিল।
বর্তমানে নারী কোটা বাদ দিয়ে যে ৭ শতাংশ কোটা রাখা হয়েছে, তার মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৫ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য ১ শতাংশ এবং শারীরিক প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য ১ শতাংশ রাখা হয়েছে।
মহিলা পরিষদ সব শিক্ষক নিয়োগে নারী কোটা পুনর্বহালের দাবি জানিয়ে সরকারের কাছে এ বিষয়ে মানবিক বিবেচনা করার অনুরোধ জানিয়েছে।