কুমিল্লার দেবীদ্বারে একটি বেওয়ারিশ প্রতিবন্ধী নারী কন্যা সন্তানের মা হয়েছেন। বুধবার (১২ মার্চ) দিবাগত মধ্যরাতে দেবীদ্বার উপজেলার ৬ নং ফতেহাবাদ ইউনিয়নের ঘোষঘর গ্রামের এক ভিক্ষুকের বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে। প্রায় পাঁচ মাস ধরে ওই প্রতিবন্ধী নারী আয়শা বেগমের আশ্রয়ে ছিলেন, যেখানে তিনি এক কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। তবে নবজাতকের বাবা সম্পর্কে এখন পর্যন্ত কেউ কোনো তথ্য প্রদান করেনি।
অজ্ঞাত ওই প্রতিবন্ধী নারী, যার নাম আকলিমা (২৫), আগে কুমিল্লার সুবিল বাজারে বসে রাস্তার মাটি খেতেন। একদিন ভিক্ষুক আয়শা বেগম ওই মহিলাকে দানের কম্বল আনতে গিয়ে দেখেন এবং তাকে নিজের বাড়িতে নিয়ে আসেন। তখন থেকে আকলিমাকে তিনি নিজের ঘরে আশ্রয় দিয়ে সেবা-যত্ন করতে শুরু করেন। আয়শা বেগম নিজেও এক দুঃসহ জীবনযাপন করছেন, কারণ তার একমাত্র ছেলে এবং ভাই দুজনই প্রতিবন্ধী, এবং তিনি একাই তাদের ভরণ-পোষণের দায়িত্বে আছেন।
গত মঙ্গলবার (১১ মার্চ), স্থানীয় সাংবাদিকদের উদ্যোগে ওই প্রতিবন্ধী নারীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয় এবং তার আল্ট্রাসনোগ্রামসহ চিকিৎসা প্রদান করা হয়, কিন্তু হাসপাতালে রাখা সম্ভব হয়নি। এমন পরিস্থিতিতেই অজ্ঞাত আকলিমা এক ফুটফুটে কন্যা সন্তানের জন্ম দেন, তবে তার মানসিক প্রতিবন্ধী অবস্থার কারণে তিনি নিজের নাম ছাড়া কিছুই বলতে বা লিখতে পারেননি।
আয়শা বেগম জানিয়েছেন, গর্ভাবস্থায় আকলিমা তাকে প্রায়ই বিরক্ত করতো, তাকে মারধর করতো, কিল-ঘুসি দিতো, তবে তিনি তাকে সহ্য করে যত্ন নেন। এখন, তার এই অবস্থায় আয়শা বেগম নতুন সন্তানের সঙ্গে বিপাকে পড়েছেন এবং তিনি সরকারের সহায়তা চাচ্ছেন।
এ বিষয়ে দেবীদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আবুল হাসনাত খান বলেন, “আমি এই কর্মস্থলে যোগদানের আগ থেকেই প্রশাসন পাগলীর জন্য আশ্রয়দাতা আয়েশাকে কিছু সহায়তা প্রদান করছে। তবে সাংবাদিকদের মাধ্যমে নবজাতকের জন্মের খবর পেয়ে আমরা সর্বোচ্চ সহযোগিতা প্রদান করব।”
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।