খেজুরের রস চুরি ঠেকাতে তালাবদ্ধ বোতল,অভিনব পদ্ধতি !

নিজস্ব প্রতিবেদক
রাকিবুল ইসলাম তনু, জেলা প্রতিনিধি পটুয়াখালী
প্রকাশিত: সোমবার ৩রা ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৪:১২ অপরাহ্ন
খেজুরের রস চুরি ঠেকাতে তালাবদ্ধ বোতল,অভিনব পদ্ধতি !

পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার লেবুখালী ইউনিয়নের মোঃ ফোরকান হাওলাদার খেজুরের রস চুরি ঠেকাতে অভিনব পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন। তিনি রসের বোতল শিকল ও তালা দিয়ে বন্ধ করে রেখেছেন, যাতে কেউ তা চুরি করতে না পারে। তার এই উদ্যোগ এলাকায় ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তালাবদ্ধ রসের হাঁড়ি দেখতে প্রতিদিনই ভিড় জমাচ্ছেন উৎসুক জনতা।  


ফোরকান হাওলাদার একজন ব্যবসায়ী হলেও খেজুরের রস সংগ্রহ করা তার শখ। কিন্তু বারবার চুরির শিকার হওয়ায় তিনি নতুন উপায় খুঁজতে থাকেন। শেষ পর্যন্ত শিকল ও তালা ব্যবহারের মাধ্যমে রস চুরি রোধের ব্যবস্থা করেন। তার এই পদ্ধতিতে বাদুর কিংবা মৌমাছিও রস খেতে পারছে না।  


তার মতে, এটি শুধু চোরদের হাত থেকেই নয়, বিভিন্ন পোকামাকড় ও ধুলাবালি থেকেও রসকে নিরাপদ রাখছে। তিনি জানান, অনেক গাছিয়াল তার পদ্ধতি দেখে উৎসাহিত হচ্ছেন এবং নিজেরাও একই ব্যবস্থা নিচ্ছেন। এতে করে খেজুরের রসের সংরক্ষণ আরও নিরাপদ হবে বলে মনে করছেন অনেকে।  


আঠারোগাছিয়া গ্রামের বাসিন্দা আক্তারুজ্জামান শামিম বলেন, আগে কখনো খেজুরের রস তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখিনি। রসের দাম বেশি হওয়ায় চুরি হয়, কিন্তু এমন অভিনব উপায়ে তা রক্ষা করা সত্যিই চমকপ্রদ। ফোরকান হাওলাদারের বুদ্ধি দেখে ভালো লাগলো।  


বর্তমানে খেজুর গাছের সংখ্যা কমে যাওয়ায় রসের চাহিদা অনেক বেড়েছে। দামও তুলনামূলক বেশি, তাই চুরি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে রাতে কেউ পাহারা না দিলে গাছ থেকে রস চুরি হয়ে যায়। অনেক সময় চোর শুধু রস নয়, হাঁড়িও নিয়ে যায়। ফলে গাছিয়ালদের জন্য এটি বড় সমস্যায় পরিণত হয়েছে।  


ফোরকান হাওলাদার বলেন, “এটা আমার কোনো পেশা নয়, এটা আমার শখ। অনেক পরিশ্রম করে রস সংগ্রহ করি, কিন্তু চুরি হয়ে যাওয়ায় হতাশ হতাম। তাই নতুন উপায় খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছি। এখন আমার সংগ্রহ করা রস নিরাপদ থাকছে।”  


তার এ উদ্যোগ দেখে অনেকেই নিজের খেজুর গাছের রস সুরক্ষার জন্য একই ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছেন। ফলে পটুয়াখালী অঞ্চলে ধীরে ধীরে এটি জনপ্রিয় হয়ে উঠতে পারে বলে ধারণা করছেন স্থানীয়রা।  


গাছিয়ালদের মতে, খেজুরের রস সংগ্রহ ও সংরক্ষণের জন্য এ ধরনের পদ্ধতি কার্যকর হলে ভবিষ্যতে রসের অপচয় ও চুরি অনেকাংশে কমে যাবে। অনেকেই মনে করছেন, এ উদ্যোগ ছড়িয়ে পড়লে দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও খেজুরের রস চুরি প্রতিরোধে এটি ব্যবহার হতে পারে।