প্রকাশ: ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ২১:৫৮

কোনো ট্যাগ পাওয়া যায়নি
কক্সবাজারের টেকনাফে পাহাড়ি গহ্বরে পরিচালিত বিশেষ অভিযানে নারী ও শিশুসহ ৪৪ জন মানবপাচারের শিকার ব্যক্তিকে উদ্ধার করেছে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড। উদ্ধারকৃতদের মধ্যে তিনজন বাংলাদেশি এবং বাকিরা রোহিঙ্গা নাগরিক। এদের মধ্যে ২৯ জন নারী ও ১২ শিশু রয়েছে। তবে এ অভিযানে কোনো পাচারকারীকে আটক করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে কোস্ট গার্ড।
শুক্রবার বিকাল ৩টার দিকে কোস্ট গার্ডের টেকনাফ বিসিজি স্টেশন মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে লে. কমান্ডার সালাহউদ্দিন রশিদ তানভির এই তথ্য জানান। তিনি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বাহারছড়ার পিনিস ভাঙা পাহাড়ি এলাকায় মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত টানা অভিযান চালানো হয়। এ সময় পাচারকারীদের ডেরায় বন্দি থাকা নারী ও শিশুসহ ৪৪ জনকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়।
কমান্ডার তানভির আরও জানান, পাচারকারীরা দীর্ঘদিন ধরে পাহাড়ের চূড়ায় গোপনে এই ডেরা তৈরি করে বিদেশে পাচারের পরিকল্পনা করছিল। তারা বিভিন্ন এলাকায় প্রলোভন দেখিয়ে মানুষকে মালয়েশিয়া পাঠানোর কথা বলে টেকনাফে এনে বন্দি রাখত। পাচারের আগে তাদের কাছ থেকে মুক্তিপণও আদায় করা হতো।
উদ্ধারকৃত এক বাংলাদেশি ভুক্তভোগী মো. সুজন জানান, তিনি সুপারি কেনার জন্য টেকনাফে এসে প্রতারণার শিকার হন। এক বৃদ্ধের প্রলোভনে সিএনজিতে ওঠার পর অপর একটি গাড়ি এসে তাকে অপহরণ করে চোখ বেঁধে পাহাড়ে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে মারধর করে মুক্তিপণ দাবি করা হয় এবং তার পকেটে থাকা ৭০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয়।
কোস্ট গার্ডের অভিযান চলাকালে পাচারকারীরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে পাহাড়ি পথে পালিয়ে যায়। ফলে কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। তবে পাচারচক্রের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানানো হয়েছে।

পাচারকারীদের বিরুদ্ধে তথ্য সংগ্রহ ও গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। কোস্ট গার্ড বলছে, টেকনাফসহ উপকূলীয় এলাকায় মানবপাচার রোধে তাদের অভিযান নিয়মিতভাবে পরিচালিত হচ্ছে।
কর্মকর্তারা মনে করেন, দারিদ্র্য ও উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখিয়ে মানুষকে পাচারকারীরা প্রতারণার ফাঁদে ফেলছে। এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও জনগণকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
কোস্ট গার্ডের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, উদ্ধারকৃতদের নিরাপত্তা ও আইনি সহায়তা নিশ্চিতের পর তাদের স্থানীয় প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করা হবে। মানবপাচার প্রতিরোধে সরকার ও নিরাপত্তা বাহিনীর সম্মিলিত তৎপরতা অব্যাহত থাকবে।