প্রকাশ: ৪ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৪২
পার্বত্য খাগড়াছড়িতে অষ্টম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ ঘিরে টানটান পরিস্থিতির মধ্যে ‘জুম্ম ছাত্র-জনতা’র ডাকা অবরোধ কর্মসূচি স্থায়ীভাবে প্রত্যাহার করা হয়েছে। শনিবার সকালে সংগঠনটির অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এই সিদ্ধান্তের ঘোষণা দেয়া হয়।
বিবৃতিতে সংগঠনটি জানায়, শহীদদের ধর্মীয় রীতিতে পূণ্যকর্ম সম্পাদন, আহতদের মানবিক সহায়তা এবং প্রশাসনের আংশিক আশ্বাসের প্রেক্ষিতে অবরোধ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। তবে একই সঙ্গে তারা জানিয়েছে, ৮ দফা দাবির দ্রুত বাস্তবায়ন না হলে আরও কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
এর আগে ১ অক্টোবর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ সেনা ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে দ্বিতীয় দফা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে ‘জুম্ম ছাত্র-জনতা’র নেতারা ৮ দফা দাবি, ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার এবং হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার দাবি জানান।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে বৈঠকে নিহতদের পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা করে সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দেয়া হয় এবং অন্যান্য দাবিগুলো পর্যায়ক্রমে বিবেচনা করার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়। সংগঠনটির নেতারা এই আশ্বাসকেই অবরোধ প্রত্যাহারের অন্যতম কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “আমরা সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, প্রশাসনের আংশিক আশ্বাসের ভিত্তিতে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত অবরোধ কর্মসূচি সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহার করছি। তবে আমাদের দাবিগুলোর বাস্তবায়ন বিলম্বিত হলে আবারও অনির্দিষ্টকালের কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হব।”
গত ২৩ সেপ্টেম্বর রাতে জেলার সিঙ্গিনালা এলাকায় এক মারমা কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগের পর উত্তাল হয়ে ওঠে পুরো খাগড়াছড়ি। ঘটনাটির জেরে ‘জুম্ম ছাত্র-জনতা’ অনির্দিষ্টকালের অবরোধের ডাক দেয়, যা পরে সংঘর্ষ ও সহিংসতায় রূপ নেয়।
চিকিৎসক দলের মেডিকেল পরীক্ষায় পরবর্তীতে কিশোরীর শরীরে ধর্ষণের কোনো আলামত না পাওয়া গেলে পরিস্থিতি নতুন মোড় নেয়। তবে এরই মধ্যে গুইমারায় সংঘর্ষে তিনজন নিহত হন, একাধিক বাড়ি ও দোকানে অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটে।
এই ঘটনায় পুলিশ তিনটি মামলা দায়ের করেছে, যেখানে প্রায় ১২০০ অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। প্রশাসন এখন এলাকায় শান্তি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনা টহল জোরদার করেছে যাতে পুনরায় উত্তেজনা সৃষ্টি না হয়।