প্রকাশ: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭:৪৯
খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলায় পাহাড়ি কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের প্রতিবাদে ‘জুম্ম-ছাত্র জনতা’র ডাকে অবরোধ চলাকালে রোববার দুপুরে রামেসু বাজারে ব্যাপক অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় বাজারের বহু দোকান ও আশপাশের বসতবাড়ি পুড়ে যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হঠাৎ করেই বাজারে কয়েকজন মুখোশধারী এসে লুটপাট চালায় এবং পরে আগুন ধরিয়ে দেয়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য অনুযায়ী, কমপক্ষে ২০টি দোকান ও বেশ কয়েকটি বসতবাড়ি সম্পূর্ণভাবে আগুনে পুড়ে গেছে। বাজারের দোকানমালিকদের অধিকাংশই পাহাড়ি হওয়ায় ক্ষতির মাত্রা আরও বাড়তে পারে বলে স্থানীয়রা মনে করছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, আগুনে দোকানপাট ও বাড়িঘর জ্বলছে আর এলাকাবাসী আতঙ্কে দৌড়াচ্ছে।
দ্বীপায়ন ত্রিপুরা নামের এক স্থানীয় নেতা বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত সুপরিকল্পিত। তিনি অভিযোগ করে বলেন, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যখন পার্বত্য উপদেষ্টাসহ সরকারি শীর্ষ কর্মকর্তাদের বৈঠক চলছিল ঠিক তখনই নিরীহ পাহাড়িদের ওপর হামলা ও অগ্নিসংযোগ হয়েছে। এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
অভিযোগ রয়েছে, ২০ থেকে ২৫ জনের একটি দল মুখোশ পরে বাজার ও বসতবাড়িতে হামলা চালিয়ে লুটপাট করে এবং যাওয়ার সময় আগুন লাগিয়ে দেয়। তারা দোকানপাটের পাশাপাশি বাজারের পাশে থাকা মোটরসাইকেলগুলোতেও আগুন ধরিয়ে দেয়।
জুম্ম ছাত্র জনতার সংগঠক সুইচিসাই বলেন, দুপুরের পর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু সদস্য বাজার এলাকায় তল্লাশি চালাতে গেলে এলাকাবাসী প্রতিবাদ শুরু করে। এ সময় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে এবং নিরাপত্তা বাহিনীর ছররা গুলিতে ৬ থেকে ৭ জন গুরুতর আহত হয়েছেন।
স্থানীয়দের দাবি, এই হামলা ও অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। তারা বলেন, পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে যেন পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর ওপর চাপ সৃষ্টি হয়।
খাগড়াছড়ির গুইমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. এনামুল হক চৌধুরী গণমাধ্যমকে জানান, অবরোধ নিয়ে পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে উত্তেজনা চলছে। পরিস্থিতি বর্তমানে উত্তপ্ত এবং বিস্তারিত পরে জানানো হবে।
ঘটনার পর পুরো এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চেষ্টা করছে এবং ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিমাণ নির্ধারণের কাজ করছে। এলাকাবাসী শান্তি ও নিরাপত্তা ফিরিয়ে আনার জন্য দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে।