প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৬:১৯
মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার জায়ফরনগর ইউনিয়নে এক হতদরিদ্র নারীর প্রাপ্য ভিজিডি কার্ডের চাল আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী অর্পণা রানী দাস এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগে তিনি জানান, সরকারিভাবে তার নামে কার্ড থাকা সত্ত্বেও চাল অন্য এক নারীর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
অর্পণা রানী দাস জানান, গত ১০ সেপ্টেম্বর স্থানীয় ইউপি সদস্য আজাদ মিয়া তার হাতে ভিজিডি কার্ডটি দেন। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই ইউনিয়ন সচিব রঞ্জন রায় ও ওই ইউপি সদস্য জোরপূর্বক তার কাছ থেকে কার্ডটি কেড়ে নেন। এরপর তার ছবি ছিঁড়ে অন্য এক সচ্ছল নারীর ছবি বসিয়ে কার্ডের নাম-পরিচয় পরিবর্তন করে দুই মাসের ৬০ কেজি চাল অন্যকে দিয়ে দেন।
ভুক্তভোগীর অভিযোগ, তিনি বারবার অনুরোধ করলেও সচিব ও সদস্য তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করে তাকে তাড়িয়ে দেন। এমনকি ইউপি চেয়ারম্যান মাসুম রেজাকে বিষয়টি জানানো হলেও তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি। অর্পণা রানী দাস বলেন, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী কার্ড পেতে তিনি ডাচ বাংলা ব্যাংকের মাধ্যমে ৪৪০ টাকা জমা দিয়েছেন, অথচ তার প্রাপ্য চাল প্রতারণার মাধ্যমে অন্যকে দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জায়ফরনগর ইউনিয়ন পরিষদের ভিজিডি চাল ভিডব্লিউবি কর্মসূচির অধীনে তৈরি তালিকায় ভুক্তভোগীর নাম ও ছবি সংযুক্ত রয়েছে। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিডব্লিউবি কার্ড নম্বর-৪৯ তার নামে ইস্যু করা হয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে ইউপি সদস্য আজাদ মিয়ার মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। তবে সচিব রঞ্জন রায় জানান, অর্পণা রানী নামে একাধিক মহিলা থাকায় ভুল হয়েছে এবং দ্রুত সংশোধন করে কার্ড বাতিল করা হবে।
ইউপি চেয়ারম্যান মাসুম রেজা বলেন, এটি ভুল বোঝাবুঝি, দ্রুতই এর সমাধান করা হবে। তিনি জানান, প্রাপ্য চাল সঠিকভাবে দেওয়ার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জুড়ী উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার দায়িত্বপ্রাপ্ত মো. সুজাউদ্দৌলা বলেন, সরকারি তালিকাভুক্ত ভিজিডি কার্ডধারীর চাল অন্য কাউকে দেওয়ার ক্ষমতা কারও নেই এবং এই বিষয়ে তদন্ত করা হবে।
জুড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বাবলু সূত্রধর বলেন, ঘটনাটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আশ্বাস দেন, প্রাপ্য ভিজিডি চাল অর্পণা রানী দাসের হাতে পৌঁছানোর জন্য প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।