প্রকাশ: ২৭ আগস্ট ২০২৫, ১২:১২
বঙ্গোপসাগর ও নাফ নদে বাংলাদেশি জেলেদের জন্য নতুন করে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরকান আর্মি। সাগরে মাছ শিকার শেষে ফেরার পথে নাফ নদী ও মোহনায় তারা জেলেদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে এবং ট্রলার ও জালসহ লুটপাট করছে। ফলে জেলে পরিবার ও ট্রলার মালিকরা অসহায় অবস্থায় পড়েছেন।
জানাগেছে, চলতি আগস্ট মাসে অর্ধশতাধিক জেলেকে জিম্মি করেছে আরকান আর্মি। এর মধ্যে ২৬ আগস্ট ১১ জন, ২৪ আগস্ট ১৪ জন, ২৩ আগস্ট ১২ জন এবং ১২ আগস্ট ৭ জনকে আটক করা হয়েছে। এখনও তাদের মধ্যে অনেকে ফিরিয়ে আনা যায়নি। এর আগে গত কয়েক মাসে আরও অনেক জেলে এই গোষ্ঠীর হাতে আটকা পড়েছেন।
মাছ শিকারের ভরা মৌসুম শুরু হলেও জেলেরা বৈরী আবহাওয়া ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে আগে সাগরে যেতে পারেননি। এখন আবহাওয়া অনুকূল হলেও নাফ নদী ও মোহনায় আরকান আর্মির তৎপরতার কারণে নিরাপদে মাছ ধরা সম্ভব হচ্ছে না। ট্রলার মালিক সোলতান আহমেদ জানান, তার নৌকায় ১২ জেলে মাছ শিকারে যেতেও নিরাপদে ফিরতে পারছে না।
টেকনাফ পৌরসভার কায়ুকখালীয়া ঘাটে ট্রলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম বলেন, শাহপরীর দ্বীপের পূর্ব-দক্ষিণে নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগরের মোহনায় পৌঁছালে স্পিডবোটে ট্রলার ধাওয়া করে জিম্মি করা হয়। জেলেদের ফাতংজা খালে নিয়ে যাওয়া হয়। এ কারণে সাগরে মাছ শিকারে যাওয়া প্রতিনিয়ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
জিম্মি হওয়া জেলেদের পরিবার অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে। সাগরে মাছের অভাব ও জিম্মি পরিস্থিতি বাজারে মাছের সংকটও তৈরি করেছে। প্রতিবেশী দেশের গোষ্ঠীর এমন কার্যক্রমের কারণে স্থানীয় জেলে সম্প্রদায় ভয় ও আতঙ্কে রয়েছে।
গত বছরের ডিসেম্বর থেকে এই পর্যন্ত নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগরের বিভিন্ন স্থানে আরকান আর্মি ২৩৭ বাংলাদেশি জেলেকে জিম্মি করেছে। এ সময় ট্রলার ও জালও লুট করা হয়েছে। তবে সীমান্তে বিজিবি, কোস্ট গার্ড ও নৌবাহিনীর তৎপরতায় কয়েক দফায় ১৮৯ জন জেলে এবং ২৭টি ট্রলার ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।
জেলে ও স্থানীয় সচেতন মহল বিজিবি, কোস্ট গার্ড ও নৌবাহিনীর টহল জোরদার করার দাবি জানিয়েছেন। তারা মনে করছেন, এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধের জন্য স্থায়ী সমাধান জরুরি।