প্রকাশ: ১২ আগস্ট ২০২৫, ১১:৪৫
নোয়াখালীর আমানউল্লাহপুরে এক প্রবাসীকে সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে উদ্ধার করার চেষ্টা করায় জেলা জেএসডি’র সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নূর রহমান মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার ঘটনা জনমনে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। এই ঘটনার প্রতিবাদে এলাকাবাসী মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেছে।
২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে কাতার থেকে দেশে ফেরার পথে ফেনীর লালপুর এলাকায় সন্ত্রাসীদের হাতে আটকা পড়েন প্রবাসী শহীদ আলম। তারা তাকে মারধর করে মুক্তিপণ দাবি করে। এ অবস্থায় শহীদ আলম স্থানীয় ইউপি মেম্বারসহ নূর রহমানকে অবগত করলে তিনি দুই সহকর্মীর সঙ্গে ঘটনাস্থলে যান। সেখানে সন্ত্রাসীরা তাদেরও মারধর করে, রাতভর আটক রাখে এবং সাদা চেকে স্বাক্ষর নিতে বাধ্য করে।
এরপর ২৯ জুলাই নূর রহমানকে তার নিজ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই গ্রেপ্তারের পেছনে মিথ্যা মামলা রয়েছে বলে অভিযোগ। নূর রহমান দাবি করেন, ‘আমি এলাকার মানুষের বিপদে পাশে দাঁড়িয়েছি, সেটাই কি অপরাধ?’ তিনি নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিচারের দাবি জানান।
প্রবাসী শহীদ আলম জানান, কাতারে তার পরিচালিত একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানে ফেনীর কর্মচারীরা দেশে ফিরে তার নামে স্বাক্ষরিত চেক ব্যবহার করে প্রায় ২০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। পরে তারা দেশে পালিয়ে যায়। মামলা করার পর ওই চেক ব্যবহার করে তাদের সমঝোতার ফাঁদে ফেলে শহীদ আলমকে জিম্মি করে মারধর ও মুক্তিপণ দাবি করে।
নূর রহমান জানান, সন্ত্রাসীরা তার কাছ থেকেও সাদা চেকে স্বাক্ষর নেয় এবং পরে ওই চেক ব্যবহার করে মিথ্যা মামলা দেয়। এজন্য তাকে ছয়দিন কারাভোগ করতে হয়েছে।
স্থানীয়দের মধ্যে এই ঘটনা ব্যাপক আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা প্রশাসনের কাছে দ্রুত বিচার এবং সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানিয়েছে। মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলনে এলাকাবাসী ন্যায়বিচারের আহ্বান জানান।
নূর রহমান ও শহীদ আলম উভয়েই সরকারের কাছে নিরাপত্তা ও সঠিক বিচার চেয়েছেন। তারা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জোর দাবি তুলেছেন।
এ ঘটনা নোয়াখালীতে সন্ত্রাস ও প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে সচেতনতা বাড়ানোর এক দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে। স্থানীয় প্রশাসন এখন সুষ্ঠু তদন্ত ও দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে কাজ করছে।
জনগণ আশা প্রকাশ করেছে, এই ঘটনার ন্যায্য বিচার হবে এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনা যেন পুনরায় ঘটতে না পারে তা নিশ্চিত করা হবে।