সরকারি নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও সিরাজগঞ্জ জেলার একাধিক উপজেলায় অনিয়ন্ত্রিত পুকুর খনন অব্যাহত রয়েছে। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় প্রতি বছরের মতো এবারও হাজার হাজার বিঘা জমি অনাবাদি থেকে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ফলে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা।
জানা গেছে, উল্লাপাড়া উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের আগরপুর, খোদ্রশিমলা, কালিকাপুর, চৈত্রহাটি, জালশুকা, পাঠানপাড়া, দবিরগঞ্জ, পাঁচান ও কুমারগাইলজানি এবং তাড়াশ উপজেলার মাধবপুর, চকগোপীনাথপুর, সরাপপুর, বোয়ালিয়া, ঝুরঝুরী, জাহাঙ্গীরগাঁতি, চকসরাপপুর গ্রামের কৃষিজমিতে জলাবদ্ধতার ভয়াবহতা দিন দিন বাড়ছে।
স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, প্রভাবশালী কিছু ব্যক্তি আবাদি জমি দখল করে সেখানে গভীর পুকুর খনন করছেন। যত্রতত্র খননের কারণে পানি নিষ্কাশনের স্বাভাবিক পথগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই পানি জমে থাকে দীর্ঘদিন। এতে কৃষকরা তাদের জমিতে ধান বা অন্য কোনো ফসল আবাদ করতে পারছেন না।
এলাকাবাসীর ভাষ্যমতে, এই সমস্যা দীর্ঘদিনের হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। স্থানীয় ও জাতীয় গণমাধ্যমে এ বিষয়ে একাধিকবার প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও সমস্যার সমাধান হয়নি। এলাকাবাসী মানববন্ধন, স্মারকলিপি প্রদান, এমনকি ইউএনও কার্যালয়ে বিক্ষোভ করেও সাড়া পাননি।
কৃষকেরা হতাশ হয়ে জানান, বছর বছর আশ্বাসের পর আশ্বাস মিললেও মাঠে কোনো বাস্তব পদক্ষেপ দেখা যায় না। বরং পুকুর খননের পরিমাণ দিন দিন বেড়েই চলেছে।
এমনকি একপর্যায়ে উত্তেজিত এলাকাবাসী জলাবদ্ধতায় ক্ষুব্ধ হয়ে এক জায়গায় পুকুর খননের কাজে ব্যবহৃত ভেকু মেশিনে আগুন ধরিয়ে দেয়। যদিও প্রশাসন এ ঘটনাকে বিচ্ছিন্ন বলেই উল্লেখ করেছে।
এদিকে কৃষি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অনিয়ন্ত্রিত পুকুর খনন শুধু জমির উর্বরতা হ্রাস করছে না, বরং দীর্ঘমেয়াদে পুরো এলাকার কৃষি ব্যবস্থার উপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে। অবিলম্বে পরিকল্পিত পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা গড়ে তোলা না হলে কৃষিভিত্তিক অর্থনীতি হুমকির মুখে পড়বে।
এলাকাবাসীর দাবি, অপরিকল্পিত পুকুর খনন বন্ধ করে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা গ্রহণ এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।