প্রকাশ: ২৫ জুলাই ২০২৫, ১০:৩৭
চারদিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে অবশেষে না ফেরার দেশে চলে গেলেন মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র মাহতাব রহমান ভূঁইয়া। বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) দুপুর ১টা ৫০ মিনিটে ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে তার মৃত্যু হয়। মাহতাবের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন তার মামা রাকিবুল ইসলাম রাকিব।
ঘটনার দিন ২১ জুলাই স্কুল ছুটির কিছুক্ষণ আগে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান উত্তরার মাইলস্টোন স্কুলের ভবনে বিধ্বস্ত হয়। এতে অনেক শিক্ষার্থী হতাহত হয়। মাহতাব ওই দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন এবং তার শরীরের প্রায় ৮৫ শতাংশ পুড়ে যায়।
দুর্ঘটনার পরপরই তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হয়ে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয়। সেখানে তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। মাহতাব ইংলিশ ভার্সনের সপ্তম শ্রেণিতে পড়তেন এবং তার স্টুডেন্ট আইডি ছিল ১০১৪।
তার বাবা মিনহাজুর রহমার ভূঁইয়া জানান, মৃত্যুর আগে মাহতাব শান্তভাবে বলেছিল, “বাবা, আমার জন্য টেনশন করোনা, আমি সুস্থ হয়ে যাব ইনশাল্লাহ।” ছেলেকে আশ্বস্ত করতে গিয়ে চোখের জল চাপতে পারেননি তিনি।
মাহতাব ছিলেন কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার চুলাশ গ্রামের বাসিন্দা। তিনি তিন ভাইবোনের মধ্যে দ্বিতীয়। তার বড় বোন নাবিলা একই স্কুলের দশম শ্রেণিতে পড়ে, আর ছোট বোন নাইসার বয়স মাত্র তিন বছর।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মাহতাবের মরদেহ ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে আনা হয়। স্বজনদের আহাজারিতে এলাকাজুড়ে নেমে আসে শোকের ছায়া। এলাকাবাসী চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি।
রাত পৌনে ১০টায় রাজামেহার ইউনিয়নের চুলাশ-উখারী বাজার ঈদগাঁ মাঠে জানাজা শেষে মাহতাবকে পারিবারিক কবরস্থানে তার বড় দাদার কবরের পাশে দাফন করা হয়। জানাজায় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল হাসনাত খাঁন এবং নামাজ পড়ান মাওলানা লোকমান হোসেন।
বৃষ্টির কারণে জানাজার কোনো ছবি তোলা সম্ভব হয়নি। তবে মাহতাবের ফাইল ছবি এবং লাশবাহী গাড়ির মুহূর্তটি স্মৃতিতে গেঁথে গেল উপস্থিত সবার হৃদয়ে।