প্রকাশ: ২২ জুলাই ২০২৫, ১৫:৪২
মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হওয়া শিক্ষার্থী তানভীর হোসেনের মরদেহ গ্রামের বাড়ি নেওয়ার পথে আরও একটি দুঃখজনক ঘটনা ঘটে। তার লাশবাহী ফ্রিজার ভ্যানটি গাজীপুরের কালিয়াকৈরের মৌচাক এলাকায় দুর্ঘটনার শিকার হয়। এতে গাড়িতে থাকা তানভীরের চাচাতো ভাই সাইফুল ইসলাম আহত হন। সোমবার দিবাগত রাত আনুমানিক ২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনার পরপরই মরদেহটি অন্য একটি গাড়িতে স্থানান্তর করে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার নগরভাদ গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়।
তানভীর হোসেন ছিলেন মাত্র ১৪ বছর বয়সী, গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার ওয়ার্শী ইউনিয়নের নগরভাদ গ্রামে। তিনি রাজধানীর মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন। বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে বিদ্যালয়ে পড়ুয়া অন্যান্য শিক্ষার্থীর সঙ্গে তিনিও নিহত হন। তাঁর অকাল মৃত্যুতে পরিবার ও এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রাজধানী থেকে মরদেহবাহী ফ্রিজার গাড়িটি রাত ২টার দিকে মৌচাক এলাকায় একটি সড়ক বিভাজকের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে উল্টে যায়। এতে যানটির সামনের অংশ দুমড়ে-মুচড়ে যায় এবং এতে থাকা সাইফুল আহত হন। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত উদ্ধার অভিযান চালানো হয় এবং বিকল্প যানবাহনের মাধ্যমে মরদেহ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছানো হয়।
তানভীরের চাচা ও স্থানীয় ইউপি সদস্য আবুল কালাম আজাদ জানান, দুর্ঘটনার পর দ্রুত অন্য গাড়ির ব্যবস্থা করে মরদেহ পাঠানো হয়। ভোর ৪টার দিকে মরদেহ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছায় এবং সকাল ১০টায় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। দাফনকালে স্বজনদের কান্না ও আহাজারিতে পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে।
এই মর্মান্তিক ঘটনার পর একদিকে যেমন মূল বিমান দুর্ঘটনার রেশ কাটেনি, অন্যদিকে তানভীরের মরদেহ বহনকারী গাড়ির দুর্ঘটনা নতুন করে শোক ও আতঙ্ক ছড়ায়। পরিবার ও এলাকাবাসীরা এই ঘটনায় শোকাহত ও হতবিহ্বল। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও চলছে শোকের আবহ, সহপাঠীরা তানভীরের জন্য দোয়া ও স্মরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।
একজন কিশোর শিক্ষার্থীর এমন মর্মান্তিক বিদায় জাতির জন্যও এক ধরনের মনোবেদনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দুর্ঘটনার পর প্রশাসনের পক্ষ থেকে যথাযথ সহায়তা ও তদন্তের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, তবে পরিবারটি এখন শুধুই সন্তানের শূন্যতায় দিশেহারা।