খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার ভাইবোনছড়া এলাকায় অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক ত্রিপুরা কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে চার যুবককে আটক করেছে সেনাবাহিনী। বুধবার (১৬ জুলাই) রাতে স্থানীয় বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। পলাতক আরও দুইজনকে খুঁজছে পুলিশ।
আটককৃতরা হলেন সাদ্দাম হোসেন, এনায়েত, সাকিব আলম ও আরমান হোসেন। পলাতক দুজন হলেন মুনির হোসেন ও সোহেল ইসলাম। সকলেই ভাইবোনছড়া এলাকার বাসিন্দা। অভিযোগ রয়েছে, তারা বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের সঙ্গে যুক্ত, যদিও দলীয় নেতারা এ দাবি নাকচ করেছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে গত ২৭ জুন রথযাত্রার মেলা শেষে। কিশোরীটি এক আত্মীয়ের বাড়িতে রাত্রিযাপন করছিল। রাতেই অভিযুক্তরা বাড়িতে ঢুকে তাকে ও এক যুবকের বিরুদ্ধে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ তোলে। যুবককে বেঁধে রেখে তারা কিশোরীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে।
ভয় ও লজ্জায় কিশোরীটি ঘটনা চেপে রাখে। তবে সম্প্রতি বিষপান করার পর তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে জ্ঞান ফেরার পর সে পরিবারকে পুরো ঘটনা জানায়। এরপর বুধবার রাতে তার বাবা ছয় যুবকের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা দায়ের করেন।
অভিযুক্তদের পরিবার দাবি করেছে, ঘটনাটি সাজানো। তাদের মতে, কিশোরীটি এক যুবকের সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় ধরা পড়ার পর ধর্ষণের মামলা করা হয়েছে। তবে স্থানীয়রা ও প্রশাসন এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে।
খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এম এন আবছার বলেন, "অভিযুক্তরা আমাদের দলের নয়। ধর্ষক কোনো দলের হতে পারে না। আমরা প্রশাসনকে সহযোগিতা করেছি এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।"
খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার আরোফিন জুয়েল জানান, আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে এবং পলাতকদের ধরতে অভিযান চলমান। ভিকটিমের মেডিকেল রিপোর্ট ও জবানবন্দি রেকর্ড শেষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিশোরীটি বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এ ঘটনায় স্থানীয়ভাবে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিন্দা ও বিচার দাবি করে আলোচনা চলছে। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তদন্ত এখনও চলমান।