মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে টানা বৃষ্টিতে নোয়াখালী জেলা শহরসহ বিভিন্ন উপজেলায় সৃষ্টি হয়েছে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা। গত ২৪ ঘণ্টায় নোয়াখালীতে ১২৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা চলতি বর্ষা মৌসুমে জেলার অন্যতম সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত। মঙ্গলবার (৮ জুলাই) সকাল ৯টা পর্যন্ত এ তথ্য নিশ্চিত করেন জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম।
তিনি জানান, মৌসুমী বায়ু সক্রিয় থাকায় আরও ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। আবহাওয়া অধিদফতর নদীবন্দরের জন্য ১ নম্বর এবং সমুদ্র বন্দরের জন্য ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলেছে। এ সতর্কতায় জনসাধারণকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
জলাবদ্ধতার কারণে জেলা শহর মাইজদীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক যেমন প্রেসক্লাব সড়ক, টাউন হল মোড়, ইসলামিয়া সড়ক, ডিসি সড়ক, মহিলা কলেজ সড়ক, জেলখানা সড়ক এবং মাইজদী বাজার সড়কে চলাচল প্রায় অচল হয়ে পড়ে। সকাল থেকেই এসব এলাকায় যানবাহন ও পথচারীদের চরম ভোগান্তির মুখে পড়তে হয়েছে। অনেক বাসাবাড়িতেও পানি ঢুকে গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থার অভাব এবং পানি নিষ্কাশনের নালা ও জলাশয়গুলো দখল ও ভরাট হয়ে যাওয়ায় বৃষ্টির পানি দ্রুত বের হতে পারছে না। এ অবস্থার জন্য পৌর কর্তৃপক্ষের অবহেলাকেই দায়ী করছেন তারা। এক বাসিন্দা বলেন, “এখানে শুধু বৃষ্টি হলেই নয়, হালকা পানিতেই রাস্তাগুলো নদীতে পরিণত হয়।”
জেলার অন্যান্য উপজেলাও একই সমস্যার সম্মুখীন। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভার করালিয়া, মওদুদ স্কুল এলাকা, কলেজ গেইট ও হাসপাতাল গেইটসহ অনেক সড়ক পানিতে ডুবে গেছে। বেগমগঞ্জ, কবিরহাট, সুবর্ণচর ও সেনবাগ উপজেলাতেও পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন স্থানীয়রা।
জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ বলেন, “আমি বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেছি। প্রধান সড়কগুলোতে জলাবদ্ধতা হয়নি, তবে কিছু সেকেন্ডারি সড়ক পানিতে ডুবে গেছে। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে পর্যবেক্ষণ করছি।”
জলাবদ্ধতা নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপ ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।