প্রকাশ: ৬ জুলাই ২০২৫, ১১:৫০
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে প্রবাসী ভাইয়ের লাশ নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে অ্যাম্বুলেন্স দুর্ঘটনায় সৌদি প্রবাসী রুবেলের বড় ভাইসহ দুইজন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও একজন। শনিবার বিকেলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বাতিসা (কালিকাপুর) এলাকায় এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতদের একজন ছিলেন রুবেলের বড় ভাই বাবুল (৩২) এবং অপরজন তাদের প্রতিবেশী ওসমান মিয়া (৪০)। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরেক প্রতিবেশী বশির মিয়া (৩০)।
জানা যায়, এক বছর আগে সৌদি আরবে মারা যান রুবেল নামের ওই প্রবাসী। শনিবার সকালে তার মরদেহ দেশে পৌঁছায়। পরে পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশীরা অ্যাম্বুলেন্সে করে মরদেহ নিয়ে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন। কিন্তু চৌদ্দগ্রামের দক্ষিণ বাতিসা এলাকায় পৌঁছালে অ্যাম্বুলেন্সটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি ১৪ চাকার লরির পেছনে ধাক্কা দেয়। সংঘর্ষটি এতটাই প্রচণ্ড ছিল যে ঘটনাস্থলেই বাবুল ও ওসমান মিয়া প্রাণ হারান।
স্থানীয়রা দ্রুত ছুটে এসে আহত বশির মিয়াকে উদ্ধার করে প্রথমে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠান, সেখান থেকে পরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অ্যাম্বুলেন্সটি অত্যন্ত দ্রুতগতিতে চলছিল এবং চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। দুর্ঘটনার পর চালক ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
নিহতদের সবার বাড়ি চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার বুঝপুর গ্রামে। প্রবাসী রুবেলের লাশ বাড়ি পৌঁছানোর আগেই তার ভাই ও প্রতিবেশীর মৃত্যুর খবরে পরিবারে আবারও শোকের ছায়া নেমে এসেছে। একই পরিবারের দুই সদস্যের মৃত্যু এবং লাশ বহনের সময় দুর্ঘটনায় আরও একাধিক ব্যক্তি আহত হওয়ায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।
মিয়াবাজার হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাবুদ্দিন জানান, দুর্ঘটনাকবলিত অ্যাম্বুলেন্সটি বেপরোয়া গতিতে চালানো হচ্ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। চালক পলাতক রয়েছে এবং তাকে শনাক্তের চেষ্টা চলছে। ঘটনাটি তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এই মর্মান্তিক ঘটনাটি আবারও প্রমাণ করলো, দ্রুতগতির যানবাহন এবং নিয়ন্ত্রণহীন চালনা কতোটা ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে। বিশেষ করে যখন শোকাবহ মুহূর্তে আরও প্রাণ হারাতে হয়, তখন তা বেদনাকে বহুগুণ বাড়িয়ে তোলে।