প্রকাশ: ৬ জুলাই ২০২৫, ১১:৩২
মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের বাতামোড়াল সীমান্ত দিয়ে ফের ১০ জন বাংলাদেশিকে ঠেলে পাঠিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। শনিবার ভোরে সীমান্ত এলাকায় টহলের সময় তাদের আটক করে ৫২ বিজিবির সদস্যরা। আটক ব্যক্তিদের মধ্যে ৭ জন পুরুষ এবং ৩ জন নারী রয়েছেন, যারা সবাই বাংলাদেশি নাগরিক বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত করা হয়েছে।
বিজিবি সূত্রে জানা যায়, বড়লেখা উপজেলার নিউ পাল্লাথল বিওপির দায়িত্বপূর্ণ সীমান্তবর্তী এলাকা বাতামোড়াল দিয়ে তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। বিজিবির একটি টহল দল পাহাড়ি এলাকা থেকে তাদের সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করেন, কয়েক মাস আগে চিকিৎসা ও জীবিকার উদ্দেশ্যে সিলেট ও কুমিল্লার সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে গমন করেছিলেন।
আটকদের মধ্যে কেউ এক মাস আগে, কেউ ছয় মাস আগে ভারতে গিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন। তারা সীমান্তবর্তী বিভিন্ন এলাকায় কাজ করতেন কিংবা চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করছিলেন। তবে ভারতের অভ্যন্তরে অবস্থানকালে তারা বিএসএফের নজরে পড়েন এবং পরে তাদের সীমান্ত দিয়ে ঠেলে পাঠানো হয়।
৫২ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, “জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, সবাই বাংলাদেশি নাগরিক। তাদের বাড়ি সাতক্ষীরা, খুলনা ও বরিশাল জেলায়। তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।”
বিএসএফ কর্তৃক এ ধরনের পুশইনের ঘটনা নতুন নয়। অতীতেও সীমান্তে এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়েছে, যা দুই দেশের সম্পর্ক এবং সীমান্ত ব্যবস্থাপনায় নানা প্রশ্ন তুলছে। বাংলাদেশি নাগরিকদের অনুপ্রবেশ এবং পরে ঠেলে পাঠানো নিয়ে প্রতিনিয়ত উত্তেজনা তৈরি হচ্ছে।
মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, সীমান্তে মানুষকে এভাবে ঠেলে দেওয়া আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের পরিপন্থী। এই বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে কার্যকর আলোচনার প্রয়োজন আছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকেও অনুপ্রবেশ রোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সীমান্তে নজরদারি বাড়ানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।
এদিকে স্থানীয়রা বলছেন, কাজ ও চিকিৎসার অভাবে এখনো অনেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করছেন। এ অবস্থায় সীমান্ত এলাকায় বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হলে অনুপ্রবেশ কমবে বলে মনে করছেন তারা।