প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৫, ১৬:২৮
জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার পুনট পাঁচপাইকা পশ্চিমপাড়া গ্রামে পারিবারিক বিরোধের জেরে সোমবার সকালে এক হৃদয়বিদারক হত্যাকাণ্ড ঘটে। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মাদকাসক্ত শ্যালক জুয়েল রানার ছুরিকাঘাতে প্রাণ হারান তার দুলাভাই শরিফুল ইসলাম। নিহত শরিফুল বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার আপসোন গ্রামের বাসিন্দা হলেও তিনি স্ত্রীর বাপের বাড়িতে বেড়াতে এসে এ ঘটনায় নিহত হন। পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, সকালে জুয়েল রানার মাদকসেবনের কারণে পরিবারের সদস্যরা এক বৈঠকে মিলিত হন এবং তাকে নেশামুক্তি কেন্দ্রে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন। এ সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে জুয়েল উত্তেজিত হয়ে ওঠে এবং আচমকা ঘরের ভেতরে ছুরি নিয়ে ঢুকে দুলাভাই শরিফুলের বাম বগলের নিচে ছুরিকাঘাত করে।
আঘাত এতটাই গুরুতর ছিল যে শরিফুল ইসলাম মাটিতে লুটিয়ে পড়েন এবং ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। ঘটনার পর পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে স্থানীয় জনতা জুয়েলকে ধাওয়া করে একটি মাঠ থেকে ধরে ফেলে এবং পরে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। ঘটনার পর ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী অভিযুক্তের বাড়িতে হামলা চালিয়ে গৃহপালিত গরু, খাবারদাবার ও আসবাবপত্র লুট করে।
নিহতের চাচা আব্দুল্লাহ অভিযোগ করে বলেন, শরিফুলকে পরিকল্পিতভাবে ডেকে এনে হত্যা করা হয়েছে। তিনি আরও দাবি করেন, জুয়েলের আগেও নানান ধরনের অস্বাভাবিক আচরণ ছিল এবং তার বিরুদ্ধে এলাকায় অভিযোগ ছিল দীর্ঘদিন ধরে। হত্যাকাণ্ডের পর পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে এবং পরিবারের সদস্যরা ভেঙে পড়েছেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহিদ হোসেন জানান, ঘাতককে আটক করে থানায় নেওয়া হয়েছে এবং মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে একটি হত্যা মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এ হত্যাকাণ্ডের পর স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা এলাকায় যান এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত নজরদারি বাড়ানোর কথা জানান। এলাকাবাসী এমন ঘটনায় বিস্মিত ও ভীত এবং তারা দ্রুত বিচার দাবিতে মুখর হয়ে উঠেছেন।