প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২৫, ১৫:৫
কোনো ট্যাগ পাওয়া যায়নি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে মঙ্গলবার সকাল থেকে ছয় দফা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি ও কর্মবিরতিতে নেমেছেন উপজেলার স্বাস্থ্য সহকারীরা। বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশন, সরাইল উপজেলা শাখার ব্যানারে তারা এই কর্মসূচি পালন করছেন। আন্দোলনকারীদের দাবি, তারা দীর্ঘদিন ধরে মেধা ও পরিশ্রমে দেশের ইপিআই কার্যক্রমসহ বহু আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সাফল্যের অংশ হলেও পদমর্যাদা ও গ্রেডে চরম বৈষম্যের শিকার।
তারা জানান, মানব শিশুর জন্মের পর থেকেই টিকাদান কার্যক্রমে মাঠপর্যায়ে কাজ করছে স্বাস্থ্য সহকারীরা। অথচ যাদের কাজ একেবারে প্রযুক্তিগত ও টেকনিক্যাল, তারা টেকনিক্যাল মর্যাদা পাচ্ছেন না। এই বৈষম্যের কারণে তারা সরকারি অন্যান্য দপ্তরের কর্মচারীদের তুলনায় বেতন ও সুযোগ-সুবিধায় পিছিয়ে রয়েছেন।
বক্তারা আরও জানান, তাদের নিয়োগবিধি সংশোধন করে স্নাতক বা সমমানের শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণ, ১৪তম গ্রেড প্রদান এবং ইন সার্ভিস ডিপ্লোমাধারীদের ১১তম গ্রেডে উন্নীত করা জরুরি। একইসঙ্গে, স্বাস্থ্য সহকারী থেকে উচ্চতর পদে পদোন্নতির ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করার দাবিও জানিয়েছেন তারা।
তারা অভিযোগ করেন, বারবার আবেদন ও স্মারকলিপি দিয়েও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগ তাদের দাবি বাস্তবায়নে কার্যকর উদ্যোগ নেয়নি। এই পরিস্থিতিতে আন্দোলন ছাড়া বিকল্প পথ তাদের নেই বলে মন্তব্য করেন নেতারা।
আন্দোলনকারীরা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, যদি দাবি দ্রুত বাস্তবায়ন না হয়, তবে আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে জাতীয় ইপিআইসহ সকল কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হবে। এতে দেশের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবায় বড় ধরনের ব্যাঘাত ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সভাপতি মো. জহিরুল কবির (সিহাব), সহ-সভাপতি শেখ রফিকুজ্জামান (কাজল), সাধারণ সম্পাদক মো. মনির হোসেন (সুমন), সাংগঠনিক সম্পাদক মো. এস কে রিপনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
তাদের ছয় দফা দাবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো নিয়োগবিধি সংশোধন, গ্রেড উন্নীতকরণ, ডিপ্লোমা সনদের স্বীকৃতি ও বেতন বৈষম্য দূরীকরণ। তারা আশা করছেন, সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে দেশের ২৬ হাজার স্বাস্থ্য সহকারীর দাবি বাস্তবায়ন করবে।
অবশেষে আন্দোলনকারীরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমে সরকারকে বার্তা দিয়েছেন—সমান মর্যাদা ও ন্যায্য প্রাপ্য থেকে তারা আর পিছিয়ে থাকতে চান না। দাবি না মানলে ভবিষ্যতে আন্দোলনের মাত্রা আরও তীব্র হবে বলেও জানিয়েছেন তারা।