প্রকাশ: ২৩ জুন ২০২৫, ১২:১৯
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে জমি সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে একটি দোকান দখল করে ইসলামিক পাঠাগার স্থাপনকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে জামায়াতে ইসলামীর স্থানীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে, যারা আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে এমন কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছেন বলে দাবি করছেন ভুক্তভোগী দোকান মালিক ও ভাড়াটিয়া। দোকান মালিক মোহাম্মদ হারুন জানান, তার মালিকানাধীন দোকানঘর তিনি মো. মাহফুজুর রহমানকে ভাড়া দিয়েছিলেন, কিন্তু ইউনিয়ন জামায়াতের আমির আলাউদ্দিনের নেতৃত্বে স্থানীয় কয়েকজন কর্মী সেটি দখলে নিয়ে পাঠাগার চালু করেন।
ঘটনার সূত্রপাত আমিশাপাড়া ইউনিয়নের ভদ্রগাঁও এলাকায়, যেখানে ২০০৯ সালে জামায়াত নেতারা মৃত ফজলুল হকের ছেলে সিরাজুল ইসলামের কাছ থেকে জমি কিনলেও সেখানে কোনো স্থাপনা গড়ে তোলা হয়নি। হারুন দাবি করেন, তার জমির সীমারেখার মধ্যেই দোকানটি অবস্থিত এবং তিনি এর বৈধ মালিক। গত বছর থেকে দখল চেষ্টা শুরু হলে বিষয়টি আদালতে গড়ায় এবং পুলিশ তদন্তে জমির মালিক হিসেবে হারুনের নাম উঠে আসে।
পরবর্তীতে আদালতের নির্দেশে মাহফুজুর রহমান পুনরায় দোকান বুঝে পেলেও, কয়েক দিনের মধ্যেই পাঠাগার স্থাপনের নামে আবার দখল করে জামায়াত নেতারা। এতে প্রায় পাঁচ লাখ টাকার ক্ষতি হয় বলে মাহফুজুর অভিযোগ করেন, কারণ দোকানে থাকা চেয়ার, টেবিলসহ অন্যান্য মালামাল রাস্তায় ফেলে দেওয়া হয়।
মাহফুজ আরও বলেন, তিনি ১৫ বছর ধরে ওই দোকানে ব্যবসা করছেন এবং এক বছর আগে তিন লাখ টাকা অগ্রিম দিয়ে নতুন চুক্তি করেছিলেন। এই দফায় দোকান দখল হওয়ায় তিনি আর্থিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন এবং থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অন্যদিকে ইউনিয়ন জামায়াতের আমির আলাউদ্দিন দাবি করেছেন, জমিটি তারা পাঠাগার স্থাপনের উদ্দেশ্যেই কিনেছিলেন এবং দোকানটি তাদের কেনা জমির ওপর অবৈধভাবে নির্মিত হয়েছে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় সেখানে কিছু করতে না পারলেও বর্তমানে তারা জমির মালিকানা বুঝে নিচ্ছেন।
এদিকে সোনাইমুড়ী থানার ওসি মোরশেদ আলম জানান, ৯৯৯ নম্বরে কল পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছিল এবং জমি সংক্রান্ত বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সোমবার থানায় উভয় পক্ষকে নিয়ে বসার সিদ্ধান্ত হয়েছে। লিখিত অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি জানান, বিষয়টি এখনো তার হাতে আসেনি।
এ ঘটনা নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে এবং স্থানীয়রা বিষয়টির দ্রুত সমাধান দাবি করছেন, যাতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি না ঘটে।