প্রকাশ: ২১ জুন ২০২৫, ১৫:৫৮
দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরে কর্মরত পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেডের শ্রমিকরা টনপ্রতি ন্যায্য মজুরির দাবিতে কর্মবিরতি শুরু করেছেন। শনিবার দুপুরে এই কর্মবিরতি শুরু হয় এবং শ্রমিকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে। শ্রমিকদের অভিযোগ, আমদানিকারকরা যেখানে ৬০ টাকা টনপ্রতি মজুরি দিচ্ছেন, সেখানে তারা পাচ্ছেন মাত্র ১৩ টাকা, তাও সরাসরি নয় বরং সেখান থেকেও কমিশন কেটে নেওয়া হচ্ছে। ফলে তারা প্রকৃত অর্থে ৭ টাকার মতো পাচ্ছেন যা তাদের জীবনযাত্রার সাথে একেবারেই সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
সরেজমিনে হিলি বন্দরে গিয়ে দেখা গেছে, শ্রমিকরা লোড-আনলোডের কাজ বন্ধ রেখে পোর্ট চত্বরে বিক্ষোভ করছেন। তাদের চোখেমুখে ক্ষোভ আর হতাশা স্পষ্ট। কেউ কেউ বলছেন, দীর্ঘ দুই দশক ধরে এই বন্দরে কাজ করেও তারা কখনোই ন্যায্য পারিশ্রমিক পাননি। তাঁদের পরিবার পরিজন নিয়ে স্বাভাবিক জীবনযাপন করা কঠিন হয়ে পড়েছে। শিশুদের পড়াশোনার খরচ, সংসারের নিত্যপ্রয়োজনীয় খরচ এমনকি ঠিকমতো খাবার জোটানোও তাদের জন্য কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।
একাধিক শ্রমিক জানান, আগে যেখানে ২০ টাকা টনপ্রতি মজুরি দেওয়া হতো, এখন সেটি কমিয়ে ১৩ টাকায় নামিয়ে আনা হয়েছে। অথচ এই মজুরি থেকেও ৬ টাকা সরদারের কমিশন কেটে নেওয়া হচ্ছে। ফলে প্রকৃত অর্থে তারা পাচ্ছেন মাত্র ৭ টাকা। এই বৈষম্য কেন এবং কার নির্দেশে তা হচ্ছে, সে বিষয়েও তারা জানতে চান। সরদারদের ভূমিকা নিয়েও শ্রমিকদের মধ্যে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
শ্রমিকদের দাবির মধ্যে অন্যতম হলো, বন্দরের হিসাব শাখা থেকে তাদের মজুরি সংক্রান্ত কাগজপত্র প্রকাশ করতে হবে যাতে পরিষ্কারভাবে বোঝা যায় টনপ্রতি কত টাকা নির্ধারিত হচ্ছে এবং শ্রমিকরা কী পরিমাণ পাচ্ছেন। তারা বলছেন, বহু নেতার আশ্বাসেও কোনো কাজ হয়নি, সংগঠনের সভাপতি-সেক্রেটারি করেও সমস্যা মেটেনি। এবার তারা সরাসরি কাজ বন্ধ রেখে দাবি আদায়ে নামতে বাধ্য হয়েছেন।
এই কর্মবিরতির ফলে হিলি বন্দরে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে ব্যাঘাত সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। শ্রমিকদের পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, ন্যায্য মজুরি না পাওয়া পর্যন্ত তারা কর্মস্থলে ফিরে যাবেন না। বিষয়টি নিয়ে পোর্ট কর্তৃপক্ষ বা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।