প্রকাশ: ১৮ জুন ২০২৫, ১৩:৮
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার মাসুদপুর সীমান্ত দিয়ে বুধবার ভোরে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ ২০ জন বাংলাদেশিকে জোরপূর্বক বাংলাদেশে ঠেলে পাঠিয়েছে বলে জানিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এদের মধ্যে ১০ জন শিশু, সাতজন নারী এবং তিনজন পুরুষ রয়েছেন। প্রবল বৃষ্টির মধ্যেই ভারতীয় বাহিনী তাদের সীমান্তের ৪/৫-১ এস আন্তর্জাতিক পিলার বরাবর মাসুদপুর এলাকায় ঠেলে পাঠিয়ে দেয়। পরে বিজিবি তাদের আটক করে ক্যাম্পে নিয়ে আসে।
বিজিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই ২০ জনের সকলেই কুড়িগ্রাম জেলার বাসিন্দা। তারা প্রায় ১০ বছর আগে বিভিন্ন সময়ে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেন এবং হরিয়ানা প্রদেশে একটি ইটভাটায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করছিলেন। সম্প্রতি ভারতের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের আটক করে এবং পরে বিএসএফ-এর ৭১ ব্যাটালিয়ন তাদের সীমান্তে এনে পুশইন করে।
বিজিবির ৫৩ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফাহাদ মাহমুদ রিংকু জানান, "বিজিবির টহল দল ভোরে বৃষ্টির মধ্যেই সীমান্তে তৎপরতা লক্ষ্য করে ওই ২০ জনকে উদ্ধার করে ক্যাম্পে নিয়ে আসে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা নিজেদের বাংলাদেশি বলে জানিয়েছে এবং তাদের বাড়ি কুড়িগ্রামের বিভিন্ন এলাকায়।"
তিনি আরও বলেন, "আমরা আটককৃতদের দেওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করেছি এবং আইনানুগ প্রক্রিয়া অনুযায়ী শিবগঞ্জ থানায় তাদের হস্তান্তরের প্রস্তুতি চলছে।"
বিজিবি দাবি করছে, ভারতীয় পক্ষ পুশইনের বিষয়ে কোনো পূর্ব ঘোষণা দেয়নি এবং এ ধরনের আচরণ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও দ্বিপাক্ষিক সীমান্ত চুক্তির পরিপন্থী। সীমান্তে পুশইন কার্যক্রম আগেও ঘটেছে, তবে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার সুযোগ নিয়ে এত বড় সংখ্যক লোক ফেরত পাঠানোর ঘটনা বিরল।
স্থানীয় প্রশাসন ও মানবাধিকারকর্মীরা বিষয়টিকে উদ্বেগজনক হিসেবে দেখছেন এবং এর নিন্দা জানিয়ে বলছেন, দুই দেশের মধ্যে সমঝোতার ভিত্তিতে এ ধরনের সিদ্ধান্ত হওয়া উচিত ছিল। বর্তমানে ২০ জন বাংলাদেশি শিবগঞ্জ থানায় হেফাজতে রয়েছেন এবং পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য তদন্ত চলছে।