প্রকাশ: ১৬ জুন ২০২৫, ১৭:৫৬
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় ১৫ বছর বয়সী স্কুলছাত্রী নাফিসা জান্নাত আনজুম হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। নিহতের প্রতিবেশী জুনেল মিয়া নামের ৩৯ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যার দেখানো মতে বিভিন্ন স্থান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ভিকটিমের স্কুল ব্যাগ, বই, জুতা ও বোরকা। সোমবার দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান মৌলভীবাজার জেলার পুলিশ সুপার এম কে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন।
পুলিশ তদন্তে নামে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নোবেল চাকমা ও মো. আজমল হোসেনসহ একটি বিশেষ দল নিয়ে। তারা ঘটনাস্থলের আশপাশে তল্লাশি চালিয়ে ভিকটিমের ব্যাগ ও জুতা উদ্ধার করে। এলাকাবাসীর সাক্ষ্য, আলামতের স্থান এবং নারী সংক্রান্ত কিছু ইঙ্গিত দেখে সন্দেহভাজন হিসেবে জুনেল মিয়াকে আটক করা হয়।
তার মোবাইল ফোনে পর্নো সাইট ব্রাউজ করার তথ্য পাওয়ার পর পুলিশ গভীরভাবে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদে রাত ১২টার দিকে জুনেল হত্যার কথা স্বীকার করে। সে জানায়, ভিকটিম প্রায়ই তার বাড়ির পাশ দিয়ে যাতায়াত করত এবং সেদিনও প্রাইভেট পড়ে ফেরার পথে কথা বলার চেষ্টা করে।
ভিকটিম কথা বলতে না চাইলে জুনেল পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে এবং চিৎকার করলে গলা টিপে ধরে। এক পর্যায়ে নাফিসা অচেতন হয়ে পড়লে তাকে কাছের ছড়ার পাড়ে ফেলে দেয়। পরবর্তীতে তার ব্যাগ, জুতা ও বোরকা আশপাশের বিভিন্ন স্থানে ফেলে দেয়।
ভিকটিমের বোরখা কিরিম শাহ মাজারের পাশে একটি পারিবারিক কবরস্থানের সীমানার ভেতর ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হয়। রবিবার দিবাগত রাতে সেই বোরকা স্থানীয়দের উপস্থিতিতে উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশের মতে, দ্রুত তদন্ত ও গ্রেপ্তার প্রক্রিয়া এই হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রক্রিয়াকে দ্রুততর করবে।
এই ঘটনায় এলাকাজুড়ে শোক ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। নারী ও শিশুর নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে এলাকাবাসী, যারা ঘাতকের কঠোর শাস্তি দাবিতে একত্র হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দ্রুততম সময়ে চার্জশিট দাখিলের মাধ্যমে এই বর্বর হত্যার বিচার নিশ্চিত করা হবে।