দৌলতদিয়া ঘাটে নেই ভোগান্তি, স্বস্তিতে ফিরছে কর্মজীবীরা

ঈদুল আজহার ছুটির পর কর্মস্থলে ফেরা শুরু করেছে রাজধানীমুখী মানুষ। আগামীকাল রোববার থেকে আবারও পুরোদমে সরকারি ও বেসরকারি অফিস চালু হবে—এই বাস্তবতায় শনিবার (১৪ জুন) সকাল থেকেই রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে কর্মমুখী যাত্রীদের ভিড় বাড়তে শুরু করেছে। তবে এবার ঈদ-পরবর্তী ভ্রমণে চোখে পড়ার মতো কোনো যানজট দেখা যায়নি, যা সাধারণত এ সময়ের চিত্র নয়।

দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পন্টুনে যানবাহনের কোনো দীর্ঘ লাইন নেই। মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাস ও অন্যান্য যানবাহনগুলো সরাসরি এসে ফেরিতে উঠছে। লঞ্চ সার্ভিসেও একই চিত্র দেখা গেছে। পন্টুনে পৌঁছানোর ৫-১০ মিনিটের মধ্যেই প্রতিটি লঞ্চ যাত্রী নিয়ে পাটুরিয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাচ্ছে।

বিআইডব্লিউটিএ ও বিআইডব্লিউটিসি সূত্রে জানা যায়, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে বর্তমানে ১৭টি ফেরি এবং ২০টি লঞ্চ নিয়মিত চলাচল করছে। গত ২৪ ঘণ্টায় (শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত) মোট ৪ হাজার ৫৩৮টি যানবাহন নদী পার হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ৭০৯টি যাত্রীবাহী বাস, ৩০৭টি ট্রাক, ১৮১২টি ছোট গাড়ি এবং ১৭২২টি মোটরসাইকেল।

লঞ্চঘাটে যাত্রীদের সঙ্গে কথা বললে জানা যায়, ঈদের ছুটি শেষে স্বাচ্ছন্দ্যে রাজধানীতে ফেরার এই সুযোগ পেয়ে অনেকেই স্বস্তি প্রকাশ করছেন। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মো. হাবিবুর রহমান বলেন, “কাল থেকে অফিস শুরু, তাই পরিবার নিয়ে আজ ঢাকা ফিরছি। সড়কে এবং ঘাটে কোথাও কোনো সমস্যা হয়নি। আশা করি বাকি পথটাও ভালোভাবে যেতে পারবো।”

বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. সালাহ উদ্দিন জানান, “ঈদ শেষে ঢাকামুখী মানুষের চাপ থাকলেও ফেরি ও লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। পর্যাপ্ত সংখ্যক ফেরি চালু রাখা হয়েছে, যাত্রীদের যাতে দুর্ভোগ না হয়।”

এদিকে গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. নাহিদুর রহমান বলেন, “এবারের ঈদ যাত্রা অনেকটাই ভোগান্তিহীন হয়েছে। যানজট ছাড়াই মানুষ নির্বিঘ্নে চলাচল করেছে। এটি সম্ভব হয়েছে স্থানীয় প্রশাসন, নৌ কর্তৃপক্ষ ও পরিবহন মালিকদের সমন্বিত প্রচেষ্টায়।”

সার্বিকভাবে এবারের ঈদ শেষে ঘরে ফেরা এবং কর্মস্থলে ফেরার অভিজ্ঞতা ছিল অনেকটাই স্বস্তিদায়ক, যা একটি সফল ব্যবস্থাপনার প্রমাণ।