প্রকাশ: ১২ জুন ২০২৫, ১০:৫৯
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে বৈঠকের অনুরোধ প্রত্যাখ্যানের মধ্য দিয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস জানায়, স্টারমারের পক্ষ থেকে এখনো ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকের কোনো সম্মতি দেওয়া হয়নি। এই প্রেক্ষাপটে ইউনূসের লন্ডন সফর ঘিরে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক অঙ্গনে নানা প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।
ড. ইউনূস দাবি করেছেন, তিনি ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকারের আমলে বিদেশে পাচার হওয়া কোটি কোটি টাকা উদ্ধারে যুক্তরাজ্যের সহায়তা পেতে লন্ডনে গেছেন। তিনি বলেন, চুরি হওয়া অর্থের একটি বড় অংশ যুক্তরাজ্যে আছে এবং ব্রিটিশ সরকারের উচিত এই অর্থ খুঁজে পেতে বাংলাদেশকে সাহায্য করা। তার ভাষায়, যুক্তরাজ্যের এ বিষয়ে নৈতিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
স্টারমারের সঙ্গে এখনও তার সরাসরি কথা হয়নি বলে জানান ইউনূস। তবে তিনি আশা প্রকাশ করেন, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের প্রচেষ্টাকে সমর্থন করবেন। এদিকে ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, স্টারমারের অফিস থেকে বৈঠকের কোনো পরিকল্পনা নেই বলে নিশ্চিত করা হয়েছে।
ড. ইউনূসের ভাষ্য অনুযায়ী, যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন সংস্থা ইতোমধ্যে পাচার হওয়া অর্থ চিহ্নিত করতে কাজ শুরু করেছে। এর প্রমাণ হিসেবে আলজাজিরার এক প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করেন তিনি, যেখানে বলা হয়, ব্রিটেনের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ) সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর যুক্তরাজ্যভিত্তিক কয়েকটি সম্পদ জব্দ করেছে।
এনসিএ জানায়, সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বিরুদ্ধে ‘ফ্রিজিং অর্ডার’ জারি করা হয়েছে, যা এখনো চলমান একটি বেসামরিক তদন্তের অংশ। এর ফলে তিনি ওই সম্পদ বিক্রি করতে পারবেন না। বাংলাদেশের অনুরোধের পরই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে এনসিএ জানিয়েছে।
এদিকে স্টারমারের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ব্রিটিশ এমপিদের মাধ্যমে জানতে পেরেছেন, স্টারমার বর্তমানে কানাডায় অবস্থান করছেন। তবে উভয় পক্ষের মধ্যে সময়সূচি সমন্বয়ের চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।
তবে নিশ্চিত না হলেও আগামী বৃহস্পতিবার কিং চার্লস তৃতীয়ের সঙ্গে ড. ইউনূসের বৈঠক ঠিক রয়েছে। সেই অনুষ্ঠানে তাঁকে 'হারমনি অ্যাওয়ার্ড ২০২৫' প্রদান করা হবে। শান্তি ও সামাজিক উন্নয়নে তার অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ এই সম্মাননা প্রদান করা হচ্ছে।