প্রকাশ: ৯ জুন ২০২৫, ২২:৫৯
কোনো ট্যাগ পাওয়া যায়নি
মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলায় ঈদের আনন্দ মুহূর্তেই রূপ নেয় বিষাদে। মেয়েকে সাঁতার শেখাতে গিয়ে পুকুরে ডুবে মারা গেলেন বাবা ও তার কিশোরী মেয়ে। সোমবার (৯ জুন) বিকেল ৪টার দিকে উপজেলার জায়ফরনগর ইউনিয়নের হামিদপুর গ্রামে ঘটে এ হৃদয়বিদারক ঘটনা।
নিহতরা হলেন হামিদপুর গ্রামের বাসিন্দা ও বাবুল ব্রিকস-এর মালিক বাবুল আহমেদ বাবু (৬০) এবং তাঁর মেয়ে হালিমা মোহাম্মদ (১৮)। হালিমা এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তিনি পড়তেন ঢাকার ভিকারুন্নেছা নুন স্কুল অ্যান্ড কলেজে।
জানা গেছে, বাবুল আহমেদ বাবু পরিবার নিয়ে ঢাকায় বসবাস করতেন। ঈদ উপলক্ষে তিনি গ্রামের বাড়ি হামিদপুরে এসেছিলেন। ঈদের পরদিন বিকেলে মেয়েকে সাঁতার শেখাতে বাড়ির পুকুরে নামেন তিনি। একপর্যায়ে হালিমা পানিতে তলিয়ে গেলে বাবুল আহমেদ মেয়েকে বাঁচাতে ঝাঁপ দেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তিনিও পানিতে ডুবে যান।
বাড়ির লোকজনের চিৎকারে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। তড়িঘড়ি করে দুজনকে উদ্ধার করে কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক দুজনকেই মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত বাবুল আহমেদের ছোট ভাই বদরুল ইসলাম বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, “সকালেও সবাই মিলে ঈদের আনন্দ করছিলাম, বিকেলে এই মৃত্যু সংবাদে আমাদের পরিবার ভেঙে পড়েছে।”
স্থানীয় বাসিন্দা নুরুল ইসলাম জানান, “বাবুল ভাই খুব ভালো মানুষ ছিলেন। মেয়েকে সাঁতার শেখাতে গিয়ে এভাবে না ফেরার দেশে চলে যাবেন— এটা কেউ কল্পনাও করতে পারেনি।”
এই করুণ ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর গোটা হামিদপুর গ্রামে নেমে আসে শোকের ছায়া। ঈদের খুশি মুহূর্তেই বিষাদে ঢেকে যায়। এখনো disbelief-এ রয়েছেন গ্রামবাসী ও আত্মীয়স্বজন।
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত জুড়ী থানা পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে রয়েছে। তাঁরা পুকুরঘাট ঘিরে রেখেছেন এবং ঘটনাটি খতিয়ে দেখছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, প্রাথমিকভাবে এটি দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু হিসেবেই বিবেচনা করা হচ্ছে।