প্রকাশ: ৬ জুন ২০২৫, ১৬:২৬
রাজবাড়ীর দৌলতদিয়াগামী একটি যাত্রীবাহী লঞ্চ এমভি ব্লাক বার্ড শুক্রবার সকালে পদ্মা নদীতে ডুবোচরে ধাক্কা খেলে আতঙ্কে ৪ জন যাত্রী নদীতে পড়ে যান। দুর্ঘটনার পর উত্তেজিত যাত্রীরা লঞ্চের কাচ ভাঙচুর করেন এবং লঞ্চের মাস্টারকে মারধরের চেষ্টা করেন। ঘটনাটি ঘটে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে, যখন লঞ্চটি মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাট থেকে দৌলতদিয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে।
দৌলতদিয়ার ৬ নম্বর ফেরিঘাটের সামনে একটি পানিতে ডুবে থাকা বালুর চরের সঙ্গে লঞ্চটি ধাক্কা খেলে পেছনের অংশ ঘুরে যায় এবং হঠাৎ কাত হয়ে পড়ে। এ সময় যাত্রীরা চিৎকার শুরু করলে অন্তত চারজন পানিতে পড়ে যান। স্থানীয় লোকজন তড়িঘড়ি করে নৌকা নিয়ে ছুটে এসে যাত্রীদের উদ্ধার করেন।
লঞ্চটির মাস্টার পলাশ মিয়া জানান, প্রবল স্রোতের কারণে লঞ্চটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে কাত হয়ে পড়ে এবং পানিতে কিছু যাত্রী ছিটকে পড়ে যায়। দুর্ঘটনার পরপরই উদ্ধার অভিযান চালিয়ে সব যাত্রীকে নিরাপদে তোলা হয় এবং লঞ্চটি ঘাটে নোঙর করা হয়।
আহত যাত্রী আশরাফুল আলম বলেন, অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে চলার কারণে চালক দিক ঠিকমতো দেখতে পারেননি। তার সাথে থাকা তিনজন যাত্রীও নদীতে পড়ে যান এবং পরে টেনে তোলা হয়। তিনি বর্তমানে সুস্থ আছেন বলে জানান।
আরিচা বিআইডব্লিউটিএ’র সহকারী পরিচালক শেরে মস্তান বলেন, ডুবোচরের অবস্থান চিহ্নিত না থাকায় দুর্ঘটনা ঘটে। তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছেন। আপাতত লঞ্চটি ঘাটে আটকে রাখা হয়েছে।
রাজবাড়ী ফায়ার সার্ভিস জানায়, মোট পাঁচজন যাত্রী নদীতে পড়েন বলে তারা খবর পেয়েছেন। এর মধ্যে চারজনকে উদ্ধার করা হয় এবং দুজনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। ডুবুরি দল ঘটনাস্থলে তল্লাশি চালাচ্ছে।
নৌপুলিশ ইনচার্জ ত্রিনাথ সাহা বলেন, দুর্ঘটনার পর চালককে মারধরের চেষ্টা করা হলে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। চালক ও সহকারী বর্তমানে নিরাপদ হেফাজতে রয়েছেন এবং তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঘটনার পর সাধারণ যাত্রীদের মধ্যে নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। স্থানীয় প্রশাসন ও বিআইডব্লিউটিএ দুর্ঘটনার কারণ তদন্ত করছে এবং ভবিষ্যতে যাতে এমন দুর্ঘটনা না ঘটে সে বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বনের কথা জানিয়েছে।