প্রকাশ: ১ জুন ২০২৫, ১২:১২
সিরাজগঞ্জের যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় নতুন করে দুর্ভোগে পড়েছে নদীতীরবর্তী জনপদ। সাম্প্রতিক টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার কাছাকাছি চলে এসেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে গত ২৪ ঘণ্টায় পানি বেড়েছে ১৮ সেন্টিমিটার, যা বিপদসীমার মাত্র ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এমন অবস্থায় নদীভাঙন ও নিম্নাঞ্চল প্লাবনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সিরাজগঞ্জ সদরের খামারবাড়ি, শাহজাদপুরের গালা এবং চৌহালী উপজেলার নিচু এলাকাগুলো ইতোমধ্যে আংশিকভাবে প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকায় বসবাসকারী মানুষজন দুর্ভোগে পড়েছেন, অনেকেই নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ঘরবাড়ি ছেড়ে যেতে শুরু করেছেন।
চৌহালী ও বেলকুচিতে নদীভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। প্রতিদিন যমুনার পাড় ভেঙে বসতবাড়ি, ফসলি জমি ও গাছপালা নদীতে বিলীন হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, আগাম কোনো প্রস্তুতি বা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে তারা নিজেরাই জিও ব্যাগ, বাঁশ ও কাঠ দিয়ে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করছেন।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সম্ভাব্য বিপর্যয় মোকাবেলায় আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পাশাপাশি জরুরি ত্রাণ সহায়তা এবং উদ্ধার কার্যক্রম চালানোর জন্য উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জানিয়েছেন, প্রতিদিন যমুনার পানি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং কোথাও পানি বিপদসীমা অতিক্রম করলে সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকার অনুরোধ করেছেন।
বন্যা ও নদীভাঙনের ঝুঁকিতে পড়া এলাকার মানুষ সরকারের প্রতি জোরালো দাবি জানিয়েছেন, যেন দ্রুত ভাঙন রোধে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় এবং দীর্ঘমেয়াদি বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়।
উজানের ঢল অব্যাহত থাকলে পরবর্তী কয়েকদিনে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ফলে সময়মতো সরকারি পদক্ষেপ ও স্থানীয়দের সচেতনতা, দুটোই প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছে।
এই পরিস্থিতিতে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ না নিলে সিরাজগঞ্জের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবনের শিকার হতে পারে এবং হাজারো মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়বে।