প্রকাশ: ১৮ মে ২০২৫, ২০:২
ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ঘটে গেছে মর্মান্তিক এক ঘটনা। কম্পিউটার সাইন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ধ্রুবজিৎ কর্মকার আত্মহত্যা করেছেন নিজের রুমে। তার ব্যক্তিগত ডায়েরিতে লেখা সুইসাইড নোটে মৃত্যুর জন্য দায়ী করা হয়েছে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে।
রোববার দুপুর ১টার দিকে কলেজের অমর একুশে হলের ৩০৭ নম্বর কক্ষে এই আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে। ধ্রুবজিতের ঘর থেকে উদ্ধারকৃত চিরকুটে লেখা ছিল, 'আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা। এত চাপ আমার পক্ষে নেওয়া সম্ভব ছিল না।'
চিরকুটে ধ্রুবজিৎ আরও লিখেছেন, ‘সরি মা, বাবা। আমি ধ্রুবজিৎ, সবার কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। কার্ডের পিন (...) টাকাগুলো মাকে দিয়ে দিও। পরেরবার ফার্মেসি নিয়ে পড়বো। হরে কৃঞ্চ।’ এই চিঠি পড়ে পরিবারের পাশাপাশি সহপাঠীরাও শোকস্তব্ধ।
ধ্রুবজিৎ কর্মকার ছিলেন ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার বিজয়পুর গ্রামের মনোতোষ কর্মকার ও সুপ্তা কর্মকার দম্পতির সন্তান। তিনি একজন মেধাবী শিক্ষার্থী হিসেবেই পরিচিত ছিলেন কলেজজুড়ে। আত্মহত্যার ঘটনার পর পুরো ক্যাম্পাসে নেমে আসে শোকের ছায়া।
কলেজের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী প্রফেসর ড. মিজানুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, রবিবার ধ্রুবজিতের পরীক্ষা চলাকালে নকলসহ ধরা পড়েন তিনি। এরপর পরীক্ষার হল থেকে বের করে দেওয়া হয় তাকে। এ ঘটনার কিছুক্ষণ পরেই তার আত্মহত্যার খবর পাওয়া যায়।
তৎক্ষণাৎ ধ্রুবজিৎকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলেও চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এই হৃদয়বিদারক ঘটনায় কলেজ প্রশাসন, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা সবাই মর্মাহত।
ঘটনাটি নিয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। শিক্ষার্থীদের মানসিক চাপ, শিক্ষা ব্যবস্থার গঠন এবং পরীক্ষার আচরণগত দিকগুলো নিয়ে আবারও প্রশ্ন উঠেছে।
এই মৃত্যু যেন শুধু একটি পরিবারের নয়, পুরো দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার দায়িত্ব ও মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির জরুরি মূল্যায়নের বার্তা বহন করে।