মৌলভীবাজার জেলাজুড়ে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজনৈতিক পরিস্থিতি। শনিবার (১০ মে) দুপুর থেকে মৌলভীবাজার জেলা শহর ও শ্রীমঙ্গল উপজেলায় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ব্যাপক বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও সর্বদলীয় ছাত্র-জনতা।
মৌলভীবাজার প্রেসক্লাব পয়েন্টে দুপুর ১টা থেকে অবস্থান নেয় বিক্ষোভকারীরা। তাদের হাতে ছিল জাতীয় পতাকা ও প্রতিবাদী ব্যানার। শহরজুড়ে তখন শোনা যায়, “লীগ ধর, জেলে ভর”, “আওয়ামী লীগ ব্যান করো”, “আজাদী আজাদী”, “খুনি কেন বাহিরে”—এমন নানা স্লোগানে প্রকম্পিত হয় পরিবেশ।
একইসঙ্গে, শ্রীমঙ্গল শহরের চৌমুহনা চত্বরে বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত চলে অনুরূপ অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ সমাবেশ। অংশগ্রহণকারীরা আওয়ামী লীগকে ‘ফ্যাসিস্ট গণহত্যাকারী’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে তাদের নিষিদ্ধকরণ ও বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান।
সমাবেশে এনসিপির নেতা এহসান জাকারিয়া বলেন, “গণঅভ্যুত্থানের আট মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও গুম-খুন ও দুর্নীতির বিচার শুরু হয়নি। আওয়ামী লীগের খুনিরা বিদেশে পালিয়ে যাচ্ছে। আমরা রাজপথে জীবন দিতে প্রস্তুত।”
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া যুবনেতা শাহ মিসবাহ বলেন, “জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে আওয়ামী লীগের পুনর্বিন্যাসের ষড়যন্ত্র কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে আছি, তবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে আপসহীন থাকব।”
ছাত্রনেতা শাহীন ইকবাল বলেন, “আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গ সংগঠনগুলো বাংলাদেশে রাজনীতির অধিকার হারিয়েছে। গণঅভ্যুত্থানপন্থি সবাই তাদের নিষিদ্ধের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাবে।”
বিক্ষোভকারীদের দাবি, শাপলা চত্বরের হত্যাকাণ্ড, বিডিআর হত্যাকাণ্ড ও গুম-খুনের জন্য দায়ী আওয়ামী লীগকে আইনগতভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুরু হওয়া এই বিক্ষোভ কর্মসূচি আজ শনিবার পর্যন্ত চলমান রয়েছে। পরিস্থিতি এখনো শান্ত হয়নি, তবে কোনো সহিংসতার খবর পাওয়া যায়নি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকার ও প্রশাসনের ভূমিকা এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। পরিস্থিতি যাতে নিয়ন্ত্রণের বাইরে না যায়, সে জন্য সংলাপ ও আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সমাধানের পরামর্শ দিচ্ছেন অনেকে।