ঢাকা সেহরোয়ার্দি হাসপাতালে ময়না তদন্ত শেষে ১৭ বছরের কিশোরী লামিয়ার লাশ তার গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। ২৬ এপ্রিল রাতে রাজধানী ঢাকার মোহাম্মদপুরের শেখেরটেক এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় লামিয়ার নিথর দেহ উদ্ধার হয়। সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার মৃত্যুর খবর শোনার পর এলাকাবাসী শোকাভিভূত হয়ে পড়ে।
লামিয়ার স্বজনরা জানিয়েছেন, আজ দুপুরে ময়না তদন্ত শেষে তার লাশ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসা হবে, যেখানে নামাজে জানাজা শেষে তাকে তার বাবার কবরের পাশে দাফন করা হবে। পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার পাঙ্গাসিয়া ইউনিয়নের ধোপার হাটে তার দাদার বাড়ির পাশেই বাবার কবরের পাশে কবর খোঁড়া ও জানাজার স্থান প্রস্তুতের কাজ চলছে।
লারেক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি থেকে কিছুদিন আগে, ১৮ মার্চ পটুয়াখালীতে নিজের বাড়ি থেকে নানা বাড়ি যাওয়ার পথে লামিয়া সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন। সাহসিকতার সঙ্গে নিজে থানায় গিয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা করেন, যার কারণে মামলাটি এখনো তদন্তাধীন রয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে দুমকি থানা পুলিশ অভিযুক্ত সাকিব ও সিফাতকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করেছে। তার এ সাহসিকতা সকলের মনে গভীর দাগ রেখে গেছে।
তবে তার মৃত্যুর পর পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে, তিনি শোক এবং মানসিক চাপের কারণে অত্যন্ত বিপর্যস্ত ছিলেন, যা তার মৃত্যুর কারণ হতে পারে। পরিবার, প্রতিবেশী ও এলাকাবাসী তার হারানো জীবনকে স্মরণ করে গভীর শোক প্রকাশ করেছে। লামিয়া ছিলেন এক সংগ্রামী তরুণী, যিনি অনেক দুর্যোগের পরেও অত্যন্ত সাহসিকতা ও মনোবলের সঙ্গে জীবন যাপন করছিলেন। তার এই অবিস্মরণীয় ঘটনা সমাজের জন্য একটি বড় শিক্ষা হয়ে রয়ে যাবে।
বাবার কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হওয়ার মাধ্যমে লামিয়ার জীবনের অধ্যায় শেষ হলেও তার সংগ্রাম এবং সাহসিকতা ইতিহাসের পাতায় অমর হয়ে থাকবে। এর মাধ্যমে সমাজে নারী নিরাপত্তা এবং মানবাধিকার নিয়ে আরও বৃহত্তর চিন্তা ও আলোচনার জন্ম হবে, যা লামিয়ার স্মৃতি চিরকাল জীবিত রাখবে।