দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় লাম্পি স্কিন ডিজিজ (এলএসডি) ও চর্মরোগের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে, যার ফলে গবাদিপশুর স্বাস্থ্যের পাশাপাশি খামারিদের মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। ভাইরাসজনিত এই রোগে প্রতিদিন নতুন নতুন গরু আক্রান্ত হচ্ছে, বিশেষ করে অল্প বয়সী ও সংকর জাতের গরুরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে বলে জানা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার প্রায় প্রতিটি এলাকায় এলএসডির উপস্থিতি রয়েছে, তবে গোয়ালডিহি ও ছাতিয়ানগড় এলাকায় রোগের প্রকোপ তুলনামূলকভাবে বেশি। এসব এলাকায় প্রায় অর্ধশতাধিক গরুতে এই রোগের লক্ষণ দেখা গেছে, ফলে খামারিরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।
আক্রান্ত গরুর শরীরে গুটি গুটি ফোলা, জ্বর, মুখ ও নাক দিয়ে লালারস পড়াসহ বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। গরুরা খাবারে অনীহা দেখাচ্ছে এবং দুর্বল হয়ে পড়ছে, যা খামারিদের জন্য বড় ধরনের অর্থনৈতিক ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি করেছে।
গোয়ালডিহি গ্রামের খামারি আশরাফ আলী জানান, তাঁর দুই বছরের একটি এঁড়ে বাছুর চার-পাঁচ দিন আগে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। গরুটির শরীরে ঘা দেখা দিয়েছে এবং খাওয়া-দাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। প্রতিদিন ওষুধ কিনে চিকিৎসা করতে গিয়ে খরচও বেড়ে যাচ্ছে বলে তিনি জানান।
আরেক খামারি সাজেদুর রহমান বলেন, বহু কষ্টে টাকা জমিয়ে কেনা গরুটি এখন লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়েছে। ইতিমধ্যে চিকিৎসা বাবদ ২-৩ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তার দাবি, যদি আগেই সরকারিভাবে ভ্যাকসিন সরবরাহ করা হতো, তাহলে হয়তো এতটা সমস্যায় পড়তে হতো না।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা রতন কুমার বলেন, আমরা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি এবং খামারিদের মাঝে সচেতনতামূলক প্রচার চালানো হচ্ছে। এলএসডি প্রতিরোধে চিকিৎসা এবং টিকাদান কার্যক্রম অব্যাহত আছে। এখনো কোনো গরুর মৃত্যু ঘটেনি বলেও তিনি জানান।
তিনি আরও বলেন, খামারিদের গরুগুলো আলাদা করে রাখতে এবং নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যেকোনো উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত প্রাণিসম্পদ দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
স্থানীয়রা আশা করছেন, দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে এবং তাঁদের গবাদিপশুর জীবন ও অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত থাকবে।