সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার গোয়ালডাঙ্গা বাজারসংলগ্ন বেড়িবাঁধ ভাঙ্গন প্রতিরোধে অবশেষে কাজ শুরু হয়েছে। সম্প্রতি নদীভাঙনের ফলে প্রায় ৬০০ মিটার রাস্তা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়, যা জনমনে ব্যাপক উদ্বেগ সৃষ্টি করে। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এলাকাটি পরিদর্শনে আসে। জেলা প্রশাসনের নির্দেশে বাঁধ রক্ষার জন্য প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে এস্কেভেটর (ভ্যেকু) মেশিন দিয়ে মাটি সরানোর কাজ শুরু করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দু’মাস আগে নদী খননের সময় যে মাটি দিয়ে রাস্তা তৈরি করা হয়েছিল, সেটি টেকসই ছিল না। ফলে প্রবল স্রোতের তোড়ে অল্প সময়েই সেই রাস্তা ধসে পড়ে এবং নদীতে বিলীন হয়। এতে এলাকাবাসীর চলাচল ও কৃষিকাজে চরম ভোগান্তির সৃষ্টি হয়। বিষয়টি নিয়ে ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের নজরে আসে। এরপর জেলা প্রশাসন থেকে সরেজমিনে পরিদর্শনের নির্দেশ দেওয়া হয়।
খুলনার শেখ সোহেল কোম্পানির ম্যানেজার আনন্দ মোহন জানান, "পানি উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে আমরা প্রাথমিকভাবে ভাঙ্গন প্রতিরোধে মাটি সরানোর কাজ শুরু করেছি। তবে এখনও স্থায়ী সমাধানের জন্য পাইলিংয়ের মাধ্যমে জিও ব্যাগ ও ব্লক দিয়ে ডাম্পিং শুরু হয়নি।"
স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এখনো পর্যন্ত সরকারিভাবে কোনো বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কৃষ্ণা রায় এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম জানান, “পূর্বে নদী খননের কাজ করা ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান নিজেদের অর্থায়নে আপাতত ভাঙ্গন প্রতিরোধের প্রাথমিক কাজ করছে। তবে যদি সরকারি বরাদ্দ আসে, তাহলে পাইলিং, জিও ব্যাগ ও ব্লক দিয়ে ডাম্পিংয়ের মাধ্যমে টেকসই বাঁধ নির্মাণ করা হবে।”
সচেতন মহলের ধারণা, এখন যে কাজ হচ্ছে তা অস্থায়ী এবং এটি দীর্ঘস্থায়ী প্রতিরোধ হিসেবে যথেষ্ট নয়। স্থানীয় বাসিন্দারা আশঙ্কা করছেন, বর্ষা মৌসুম এলে আবারও বড় ধরনের ভাঙ্গনের আশঙ্কা দেখা দিতে পারে। তাই তারা দ্রুত সরকারি বরাদ্দ দিয়ে টেকসই বাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও বলছেন, গোয়ালডাঙ্গা বাজার এলাকার বাঁধ ভেঙে গেলে আশপাশের কয়েকটি গ্রামের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে। কৃষি, যোগাযোগ ও জীবনযাত্রা চরম হুমকির মুখে পড়বে। তাই দ্রুত ও টেকসই ব্যবস্থা নেওয়ার কোনো বিকল্প নেই।
বর্তমানে এলাকা জুড়ে উদ্বেগের পাশাপাশি স্বস্তিও বিরাজ করছে, কারণ অন্তত ভাঙ্গন প্রতিরোধে প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে। তবে সবাই তাকিয়ে আছে সরকারি বরাদ্দের দিকে, যার মাধ্যমে বাস্তবায়িত হবে স্থায়ী বাঁধ রক্ষার প্রকল্প।