রাজবাড়ী পৌরসভার হিসাব রক্ষক মো. মোকলেছুর রহমানকে লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে পৌরসভা চত্বরে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে রাজবাড়ী পৌর কর্মচারী সংসদের ব্যানারে আয়োজিত এই সভায় ঘটনার তীব্র নিন্দা ও বিচার দাবি জানানো হয়।
সভায় বক্তারা রাজবাড়ী পৌরসভার সাবেক মেয়র এবং পৌর বিএনপির সভাপতি মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়ার বিরুদ্ধে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ তুলে তাঁর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। সভায় সভাপতিত্ব করেন পৌর কর্মচারী সংসদের আহ্বায়ক ও সহকারী কর নির্ধারক মো. নুরুন্নবী বাবু।
প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন লাঞ্ছিত হিসাব রক্ষক মো. মোকলেছুর রহমান, পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তায়েব আলী এবং অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ।
পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তায়েব আলী বলেন, "আমার সামনে একজন সাবেক মেয়র হয়ে কীভাবে একজন সরকারি কর্মচারীর গায়ে হাত তুলতে পারেন? আমি দেখেছি তারা পরস্পরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে তর্ক করছিলেন, কিন্তু তাও এই আচরণের কোনো যৌক্তিকতা নেই। সাবেক মেয়র উত্তেজিত হয়ে হিসাব রক্ষককে কলার ধরে ডিসি অফিসে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেন। এ ধরনের আচরণ একজন জনপ্রতিনিধির কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।"
লাঞ্ছিত কর্মচারী মো. মোকলেছুর রহমান বলেন, "আমার মাত্র তিন মাসের চাকরি বাকি। এমন অপমানজনক ঘটনার শিকার হয়ে আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি। যদিও তিনি আমার আত্মীয়, পারিবারিকভাবে সমাধানের চেষ্টা হচ্ছে, তবে সুষ্ঠু সমাধান না হওয়া পর্যন্ত থানায় করা জিডি প্রত্যাহার করবো না।"
নুরুন্নবী বাবু বলেন, "তোফাজ্জল হোসেন মিয়ার এই আচরণের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আত্মীয়তা তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার, কিন্তু কর্মস্থলে এসে এমন লাঞ্ছনা আমরা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারি না। আমরা বিচারের দাবি জানাই, বিচার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।"
উল্লেখ্য, বুধবার (৯ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে পৌর নির্বাহী কর্মকর্তার কক্ষে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতিতে সাবেক মেয়র তোফাজ্জল হোসেন মিয়া হিসাব রক্ষক মোকলেছুর রহমানকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন বলে অভিযোগ ওঠে। ঘটনার পরপরই তিনি রাজবাড়ী সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
ঘটনার বিশেষ দিক হলো, অভিযুক্ত ও ভুক্তভোগী মামাতো-ফুপাতো ভাই হলেও, তা ব্যক্তিগত সম্পর্কের বিষয় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে এবং কর্মস্থলে এমন আচরণকে অনাকাঙ্ক্ষিত ও অগ্রহণযোগ্য হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজবাড়ী পৌরসভায় ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। কর্মচারীরা একমত হয়ে জানিয়ে দিয়েছেন, ন্যায্য বিচার না হলে তারা কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।