পটুয়াখালীর বদরপুর ইউনিয়নের গাবুয়া গ্রামে এক হৃদয়বিদারক ঘটনার জন্ম দিয়েছেন এসএসসি পরীক্ষার্থী মারিয়া আক্তার। বাবার মৃত্যু সংবাদে ভেঙে পড়ার কথা থাকলেও মেয়ের অদম্য মনোবল সবার হৃদয় ছুঁয়ে গেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) সকালে। ওইদিন ভোরে মারিয়ার বাবা হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হলে তাকে দ্রুত বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু সেখানে পৌঁছানোর আগেই মারা যান তিনি।
বাবার নিথর দেহ বাড়িতে রেখে পরীক্ষা দিতে যাওয়া সহজ ছিল না মারিয়ার জন্য। পরিবারের সদস্যরা যখন শোকের ভারে বিধ্বস্ত, তখন নিজের মনকে শক্ত করে পরীক্ষার কেন্দ্রে ছুটে যান মারিয়া।
তিনি বদরপুর শহীদ স্মৃতি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী। সেখান থেকেই এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন। বাবার মৃত্যুর মতো কঠিন বাস্তবতা সামনে নিয়েও শিক্ষা জীবন থেকে পেছনে সরে আসেননি তিনি।
পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, মারিয়ার বাবা সব সময় চাইতেন তার মেয়ে লেখাপড়া করে মানুষের মতো মানুষ হোক। বাবার সেই স্বপ্ন পূরণের জন্যই মারিয়া এমন কঠিন সময়ে পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
মারিয়ার মা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, বাবার লাশ বাড়িতে রেখে পরীক্ষায় যাওয়ার দৃঢ় সিদ্ধান্ত ছিল একমাত্র তার বাবার স্বপ্ন পূরণের উদ্দেশ্যেই। বাবা চাইতেন মেয়ে লেখাপড়া শিখে বড় হোক।
এদিকে এলাকাজুড়ে বিষয়টি নিয়ে আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিবেশীরা বলছেন, বাবার মৃত্যুতে কান্নায় ভেঙে পড়ার কথা থাকলেও মারিয়ার এমন দৃঢ় মনোবল সত্যিই সবাইকে অবাক করেছে।
পরীক্ষা শেষে কেন্দ্রে আসা অনেক শিক্ষক ও অভিভাবকরাও মারিয়ার সাহসিকতাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। তারা বলছেন, এমন ঘটনা খুব কমই দেখা যায়। বাবার লাশ রেখে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া সত্যিই বড় সাহসের বিষয়।