নোয়াখালী জেলার সুধারাম থানার সাবেক টিএসআই লিটন চন্দ্র দত্ত রবিবার (২৩ মার্চ) দুপুরে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত প্রাঙ্গণে সাক্ষ্য দিতে এসে বিক্ষুদ্ধ জনতার হাতে আটক হয়েছেন। এই ঘটনা আদালত প্রাঙ্গণে তীব্র উত্তেজনার সৃষ্টি করে এবং পরে একাধিক সেনাবাহিনী ও সুধারাম থানার পুলিশ তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি হয়।
জানা যায়, লিটন চন্দ্র দত্ত গত দশ বছর মাইজদী শহরে দায়িত্ব পালন করেন। এ সময় তিনি নোয়াখালী-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীর আস্থাভাজন হয়ে ওঠেন। এই সময়েই তিনি স্থানীয় বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে নানা ধরনের হয়রানি করেন। এছাড়া, ওয়াজ মাহফিল বন্ধে নগ্ন হস্তক্ষেপ ও ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছিল তার বিরুদ্ধে। স্থানীয় বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, লিটন তার অত্যাচারে তাদের রাতের ঘুম পর্যন্ত কেড়ে নিয়েছিলেন এবং বিভিন্ন অজুহাতে মামলা দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা এবং স্বর্ণালঙ্কার হাতিয়ে নিয়েছিলেন।
রোববার দুপুরে আদালতে তার সাক্ষ্য দেওয়ার খবরে ভুক্তভোগী স্থানীয়রা আদালত প্রাঙ্গণে জড়ো হন এবং তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকেন। একপর্যায়ে তারা সাবেক টিএসআই লিটনকে আটক করে এবং তাকে হেনস্তা করেন। এসময় তিনি ক্ষমা প্রার্থনা করে বলেন, "ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যে সমস্ত কর্মকাণ্ড করেছি, তার জন্য আমি দুঃখিত।" উত্তেজিত জনতার হাতে আটক হওয়ার পর পুলিশ এবং সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে তাকে উদ্ধার করা হয়।
সূধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম জানান, “স্থানীয়দের হাতে লিটন আটক হওয়ার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়। তবে তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ না থাকায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।”
এ ঘটনায় এলাকার জনগণের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা দাবি করেছেন, এই ধরনের অপরাধীদের উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া উচিত, যাতে ভবিষ্যতে আর কোনো পুলিশ কর্মকর্তা জনগণের প্রতি এই ধরনের নির্যাতন চালাতে না পারে।