প্রকাশ: ৩ মার্চ ২০২৫, ১৭:৫৮
বাংলাদেশে ছোট-বড় ব্যবসায়ীদের জন্য অন্যতম বড় সমস্যা হলো "বাকি"—পণ্য নিয়ে টাকা না দেওয়া বা সময়মতো পরিশোধ না করা। অনেকেই সুযোগ বুঝে বিক্রেতাকে ঠকায়, আবার অনেকে ক্রেতা সেজেও প্রতারণার ফাঁদ পাতে। এতে ব্যবসায়ীরা প্রায়ই আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েন।
এই সমস্যা থেকে বাঁচতে পটুয়াখালী সদর থানার সামনে এক চায়ের দোকানের মালিক সুব্রত চন্দ্র দাস নিয়েছেন ব্যতিক্রমী এক উদ্যোগ। তার দোকানে প্রতিদিনই কিছু ক্রেতা আসতেন, যারা নিয়মিত বাকিতে চা-নাস্তা খেয়ে টাকা পরিশোধ করতেন না। এতে অতিষ্ঠ হয়ে তিনি দোকানের ভেতরে ঝুলিয়ে দিলেন একটি ব্যঙ্গাত্মক পোস্টার। এই পোস্টার দেখেই অনেক ক্রেতা লজ্জায় আর বাকি চাইতে সাহস করেন না।
সুব্রত চন্দ্র দাস জানান, “আগে প্রতিদিন অনেকেই এসে বাকি চাইতো। টাকা চাইলে নানা আজুহাত দেখাত। এখন পোস্টার দেখানোর পর বেশিরভাগ মানুষই আর বাকি চায় না। এবং এখন আর সেই অতিথি পাখি যারা বাকি খাইয়া দিতো মাসের পর মাস ফাকি, তাদের আনাগোনা অনেকটা কমছে।”
পোস্টারটিতে লেখা ছিল, “বাকি চাইলে এক কাপ চা ফ্রি!” এর পাশাপাশি পোস্টারে সরাসরি উল্লেখ করা হয়েছিল যে, চায়ের দোকানে কোনোভাবেই বাকি রাখা যাবে না এবং ব্যবসায়ীরা নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে এই ধরনের উদ্যোগ নিতে পারেন। এতে অনেক ক্রেতাই নিজেদের আচরণে পরিবর্তন নিয়ে আসেন এবং বাকি খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়।
সুব্রতর এই অভিনব উদ্যোগ ইতোমধ্যেই আশপাশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেকেই তার দোকানে এসে পোস্টারের ছবি তুলে নিয়ে যাচ্ছেন, যেন নিজেদের দোকানেও এমন নিয়ম চালু করতে পারেন। ব্যবসায়ীদের মতে, সব দোকানদার যদি একটু কৌশলী হন, তাহলে বাকিখোরদের কবল থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
সুব্রত চন্দ্র দাসের এই উদ্যোগ প্রমাণ করেছে, শুধু কৌশল ও বুদ্ধি খাটালেই ব্যবসায়ীরা সহজেই প্রতারণার ফাঁদ থেকে রক্ষা পেতে পারেন। তার উদাহরণ থেকে অন্যান্য ব্যবসায়ীরা অনুপ্রাণিত হচ্ছেন এবং নিজেদের ব্যবসায়েও ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে চেষ্টা করছেন।