প্রকাশ: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৭:২৯
দেশে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তারিখ এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে নির্বাচনের আগেই দলীয় প্রার্থী নির্ধারণের দিক থেকে সবচেয়ে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। ইতিমধ্যে ২১টি জেলায় ১০০টি আসনে সম্ভাব্য এমপি প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে দলটি। দলীয় সূত্র জানিয়েছে, বাকি ২০০ আসনের প্রার্থীও দ্রুত ঘোষণা করা হবে। গাজীপুর, মাদারীপুর, মেহেরপুর, সিরাজগঞ্জ, রাজশাহী, খুলনা, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, কিশোরগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলায় সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।
জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান জানিয়েছেন, এখনো দল অফিশিয়ালি প্রার্থী ঘোষণা করেনি। এটি কেবল প্রাথমিক নির্বাচনী প্রস্তুতি। সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি হলে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে। তিনি বলেন, নির্বাচন হতে হলে আগে মৌলিক কিছু সংস্কার জরুরি। তা না হলে এটি হবে নির্বাচন গণহত্যার শামিল।
পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বিএনপির বিকল্প শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে চায় জামায়াত। সে লক্ষ্যে দ্রুত প্রার্থী চূড়ান্ত করে সাংগঠনিকভাবে দলকে শক্তিশালী করা হচ্ছে। ৫ আগস্টের পর থেকে দেশব্যাপী কর্মী সম্মেলন, সভা-সমাবেশ ও অন্যান্য কর্মসূচির মাধ্যমে নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু করেছে দলটি। পাশাপাশি বৃহত্তর রাজনৈতিক জোট গঠনের চেষ্টাও চলছে।
জামায়াত নেতারা স্পষ্ট জানিয়েছেন, তারা ৩০০ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে অথবা তাদের নেতৃত্বাধীন জোটের ৩০০ প্রার্থী থাকবে। গত জানুয়ারিতে বরিশালের চরমোনাইতে ইসলামী আন্দোলনের আমির সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীমের সঙ্গে জামায়াতের আমিরের বৈঠক হয়েছে। দীর্ঘদিনের আদর্শিক বিরোধ থাকলেও দুই নেতা নির্বাচনে ইসলামি দলগুলোর ঐক্যের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা করেছেন।
এছাড়া খেলাফত মজলিসের কার্যালয়ে জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলনের নেতাদের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে দুই দল আগামী নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধভাবে অংশ নেওয়ার বিষয়ে একমত হয়েছে। জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল খেলাফত মজলিসের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় মিলিত হয়েছেন।
জামায়াতের একজন কেন্দ্রীয় নেতা জানান, শুধু ইসলামি দল নয়, অন্যান্য বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গেও আলোচনা চলছে। পরিস্থিতি বুঝে নির্বাচনী জোট গঠন করা হবে। বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় কে কার সঙ্গে থাকবে, তা পুরোপুরি নির্ভর করছে সামনের দিনগুলোর রাজনৈতিক সমীকরণের ওপর।
ইসলামি দলগুলোর ঐক্যের উদ্যোগ রাজনৈতিক মহলে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। জামায়াত ইতোমধ্যেই তাদের নির্বাচনী প্রচার শুরু করেছে এবং বিভিন্ন জেলার সাংগঠনিক কার্যক্রম আরও জোরদার করছে। দলের নেতারা বিভিন্ন জেলায় সফর করছেন এবং কর্মিসভায় অংশ নিচ্ছেন। নির্বাচনের আগে নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ তৈরির সম্ভাবনা রয়েছে, যা আগামী নির্বাচনের প্রভাব ফেলতে পারে।