প্রকাশ: ৩ জুন ২০২৪, ১:৪৮
নদীর অবৈধ দখল, এর পানি ও পরিবেশ দূষণ, শিল্প- কারখানা কর্র্তৃক নদীদূষণ, নদীপথের ওপর অবৈধ কাঠামো নির্মাণ ও নানাবিধ অনিয়ম রোধকল্পে এবং নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ পুনরুদ্ধার, নদীর যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ এবং নদীকে নৌ- পরিবহনযোগ্য করার লক্ষ্যে ২০১৩ সালের ২৯ নম্বর আইন জারি হয়। এই আইনকে ‘জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন আইন’ বলা হয়। সরাইল উপজেলা মাসিক আইন-শৃঙ্খলা সভা গত বৃহস্পতিবার ৩০ মে সকালে উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্সের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় নদীর জায়গা উদ্ধার করতে সদস্যরা তুমুল আলোচনা করেন। উক্ত সভায় সরাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার ( ইউএনও) মো.মেজবা উল আলম ভূইঁয়া'র সভাপতিত্বে নব-নির্বাচিত চেয়ারম্যান মো.শের আলম মিয়া ছিলেন প্রধান অতিথি। দীর্ঘদিন ধরে বছরের পর বছর সরাইল উপজেলা অরুয়াইল বাজারের নদীজায়গাসহ সরকারি জায়গা বে-দখল হয়ে আছে। এই নিয়ে আর ও কয়েকবার আইন- শৃঙ্খলা সভায় আলোচনা সহ এমন খবর গণমাধ্যমে অনেকবার প্রচারিত হয়েছে।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে অনেকবার উপজেলা প্রশাসন সরকারি জায়গায় উদ্ধার করতে উদ্যোগ নেওয়া হলেও। হঠাৎ করে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হয়ে যায়। এদিকে তথ্য সুত্রে জানান, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন নং ১৮,২০,০০০০ ,০১৮ ,০৬,০০১,১৫,(২৪) অং-১-১১০৭। বিষয়: ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাধীন সরাইল উপজেলা অরুয়াইল বাজার সংলগ্ন তিতাস নদী এবং সংযুক্ত খালের অবৈধ দখল উচ্ছেদ এবং দুষণরোধ কল্পে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন। জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন অরুয়াইল ইউনিয়নের আবু বকর সিদ্দিক নামের এক ব্যক্তি। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে ২০২১ সালে অরুয়াইলের কয়েক জন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনে আবেদন করলে কমিশনের সচিব অরুয়াইল বাজারে তিতাস নদী ও খালের অবৈধ দখল উচ্ছেদ করতে প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে বলে।
গত ৩০ মে বৃহস্পতিবার উপজেলা আইন- শৃঙ্খলা সভায় এক সাংবাদিক তিনি তার বক্তব্যে দাবী করে বলেন,জাতীয় নদী কমিশনের নির্দেশনা ও যারা নদীর জায়গা দখল করেছে তাদেরকে সরকারি জায়গা ছাড়তে চিঠি প্রেরণ করায় ।দখলদাররা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে মামলার হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। সরকারি জায়গা উদ্ধার করা এ চলমান প্রক্রিয়া।তারা সরকারের উচ্ছেদের চলমান প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে মামলা করার হুমকি দিয়েছেন। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান সদস্যরা। উপজেলা মাসিক আইন-শৃঙ্খলা সভায় বক্তারা দাবি করেছেন,অরুয়াইলে সকল সরকারি সম্পত্তি উদ্ধার করতে। প্রশাসনের সঙ্গে সহযোগিতা সহ এলাকার সকল মানুষকে দখলদারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান। তারা আরোও বলেন, সরকারি জায়গায় উদ্ধারের সময় প্রশাসনের সঙ্গে আমরাও সাথে থাকবো। তবু দখলদার থেকে নদীর জায়গাসহ অরুয়াইলে সরকারি সকল সম্পত্তি উদ্ধারের দাবি জানান।এদিকে সংশ্লিষ্ট অফিসের তথ্য মতে জানা যায়, তাদের দেওয়া সরাইল তিতাস নদী ও সরকারি জায়গার দখলদারদের ১৫ দিনের সময় দিয়ে উচ্ছেদের চিঠি দিয়েছেন সরাইল উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাছরিন সুলতানা(রিপা)। বেঁধে দেওয়া সময় গত ৯ মে অফিস থেকে চিঠি প্রেরণ করেন, শেষ হচ্ছে ২১ দিন।এদিকে সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, অরুয়াইলে নদীর জায়গা দখল করে ৩০ জন চিহ্নিত দখলদার এখনো দখল তবিয়তে রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কমিশনের সুপারিশ মোতাবেক এক্ষুনি ব্যবস্থা নিতে না পারলে দখলদারদের কবল থেকে নদী উদ্ধার করা কঠিন হয়ে পড়বে। অরুয়াইল বাজারের দখলদারদের ক্ষেত্রে এটি আরও কঠিন হবে। কারণ এর আগে সরাইল উপজেলা প্রশাসন লাল × চিহ্ন দিয়ে ছিলেন। কিন্তু রহস্যজনক কারণে দখলদারদের দখলকৃত নদীর জায়গা উদ্ধার করা হয়নি।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাছরিন সুলতানা (রিপা)বলেন,সরকারি জায়গা উদ্ধার করতে আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। আশা করছি অল্প কিছুদিনের মধ্যেই সরকারি জায়গা উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো.মেজবা উল আলম ভূইয়া বলেন,সরকারি জায়গায় উদ্ধার করতে মামলা হলে। আইনগত ভাবে মামলার জবাব দেওয়া হবে। সরকারি জায়গা উদ্ধার করা একটি চলমান প্রক্রিয়া। এ প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। তিনি বলেন, সরকারি জায়গায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে আরও কিছু কাজ বাকি রয়েছে। এগুলা শেষ হলেই দখলদারদের নদীর দখল থেকে উচ্ছেদ করা হবে।