প্রকাশ: ২০ মে ২০২৪, ০:২৯
গম ও চাল ধানকলে ফেলে ময়লা আবর্জনা মুক্ত করতে বিশেষ ব্যবস্থায় হলার করার পদ্ধতিটি বহু পুরানো। মুরগীকে পাথর খাইয়ে ওজন বাড়ানোর কুমতলব থেকে এই ধারণাটি ছাগলের ব্যাপারীরা রপ্ত করেছে বলে মনে হয়। কিন্তু ছাগল হলার করার কথাটি কেউ শোনেনি। আশ্চার্য্য ও অবাক মনে হলেও সরাইলে হাটবাজারে হলার করা ছাগল বিক্রি হচ্ছে। বিশেষ পদ্ধতিতে ছাগলের পেটে গুড় বা লবণ মিশ্রিত পানি মেশিনের সাহায্যে ঢুকিয়ে ফুলিয়ে হাটে তোলা হচ্ছে।
সোমবার সরাইল সরকারি হাসপাতালের ভিতরে পুকুর পাড়ে দুইজন ছাগলের মুখে পানি ঢুকিয়ে দেওয়ার সময় তোলা ছবি।সরেজমিনে জানাযায়,গত বছর ধরে সরাইল সদরসহ পার্শ্ববর্তী শাহবাজপুর, কালিকচ্ছ কতিপয় ছাগলের ব্যাপারী এ ব্যবস্থায় ছাগল বিক্রি করে চল্লেও তা আর মাংস বিক্রেতাদের নজর এড়ায়নি। প্রতারণার এই নতুন ফাঁদ দেখে সরাইল প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের কর্মকর্তারাও হতবাক।
অথচ এই ফাঁদে পড়ে মাংস বিক্রেতারা প্রতারিত হচ্ছে। মাংস ব্যবসায়ী একজন অভিযোগ করে বলেন, তিনি গতহাটে দুইটি হৃষ্টপুষ্ট খাসি ছাগল কিনে বাড়িতে আনেন। ছাগল দুইটিতে ১২ কেজি করে ২৪ কেজি মাংস আন্দাজ করে কেনা হয়। বাড়ি আনার পর সারা রাত ধরেই প্রসাব পায়খানা করে জীর্ণশীর্ণ হয়ে যায়। সরাইল হাটে জবাই করে প্রতিটি ছাগলের মাংস হয় ৮ কেজি করে। এতে তিনি ক্ষতিগ্রস্ত হন।
কালিকচ্ছ এলাকার গৃহবধূ লিলিমা বেগম জানান, তার মেজ দেবর দুইটি খাসি ছাগল কিনে আনেন ছেলের আকিকা জন্য। পরদিন কথিত হৃষ্টপুষ্ট ফোলা সেই ছাগল রোগা আর জীর্ণ মনে হয়। তিনি আরও জানান, হলার করা ছাগল নিয়ে ছাগল পালকরা খুবই বিপদে আছে। কারণ বাজার থেকে কিনে আনার পর কারো বুঝে উঠার ক্ষমতা নেই এটা হলার করা না গৃহস্থালী বাড়ির ছাগল।
বেশ কিছু মাংস বিক্রেতারা জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সবচেয়ে বড় হাট হচ্ছে সুহিলপুর বাজার। এই হাট ছাড়াও সদর উপজেলার,সরাইল বাজার হাটে অহরহ হলার করা ছাগল বিক্রি হচ্ছে।এই পদ্ধতিতে ছাগল মোটাতাজা করার বিষয়টি কারো ধারণাই আসে না এমন কথা জানালেন সরাইল উপজেলা প্রাণিসম্পাদ কর্মকর্তাগণ।
বিষয়টি নিয়ে সরাইল উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা.মোছাম্মাৎ নইফা জানান,বিষয়টি তিনি জানতে পেরে সরাইল হাটে বাজারে নজরদারী বৃদ্ধি করবেন।
তিনি বলেন,শুধু ছাগলই নয় গরুও হলার করা হচ্ছে।তিনি বলেন,খোঁজ নিয়ে জেনেছি বাজারে তোলার আগে ছাগলের মুখে পানি ঢুকিয়ে ওজন বাড়িয়ে বিক্রি করে। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।