প্রকাশ: ৩০ নভেম্বর ২০২৩, ০:৪৫
মাদারীপুর-৩ আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য প্রার্থী আব্দুস সোবহান গোলাপের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি চরম ভাবে ভঙ্গ করে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) দুপুরে ঢাক ঢোল বাঁশি বাজিয়ে ও দুই শতাধিক প্রাইভেটকার মাইক্রোবাস ও মটরসাইকেল গাড়ি বহর নিয়ে কয়েক হাজার নেতাকর্মী নিয়ে উপজেলা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও কালকিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার দাসের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন। এ সময় দলীয় সমর্থকেরা তার পক্ষে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেন।
প্রার্থীর সঙ্গে পাঁচজনের বেশি নেতাকর্মীর না যাওয়ার নির্দেশনা সত্ত্বেও মিছিল নিয়ে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আবদুস সোবহান গোলাপ রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এসময় উপজেলার প্রধান সড়কে দুই ঘন্টার বেশি সময় যানজট সৃষ্টি হয়। উপজেলার কয়েক হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়ে। স্থানীয়দের দাবী এটা দৃশ্যত এটা বড় ধরনের আচরণবিধি লঙ্ঘন।
নির্বাচন কমিশনের জাতীয় সংসদ নির্বাচণ আচরণ বিধিমালা অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় কোনো প্রকার মিছিল কিংবা শোডাউন করা যাবে না। সেখানে নেতাকর্মীরা ঢাল ঢোল বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে হাজার হাজার নেতাকর্মী নিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা রুমে প্রবেশ করেন। এ নিয়ে আলোচনা সমালোচনার ঝড় সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় এবং প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে তিনি কয়েক হাজার নেতাকর্মী নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন। যেখানে রিটানিং কর্মকর্তার কাছে পাঁচ জনের বেশি লোক প্রবেশ করা যায় না সেখানে তিনি অনেক লোক নিয়ে রিটানিং কর্মকর্তার কাছে প্রবেশ করেছে এবং নির্বাচন কার্যালয়ের সামনে হাজার হাজার নেতাকর্মীরা তার জন্য স্লোগান দিয়েছেন। এসময় উপজেলা সদরের প্রধান সড়কে যানজট সৃষ্টি হয়।
উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও স্বতস্ত্র প্রার্থী তাহমিনা বেগম বলেন, বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের দেখা উচিত। আমিতো ইচ্ছা করলেও গোলাপের সাহেবের চেয়ে আরো কয়েকগুন বেশি নেতাকর্মী নিয়ে শো-ডাউন করে মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারতাম। কিন্তু আমরা তা করিনি।
কালকিনি উপজেলার আওয়ামীলীগের বেশ কয়েকজন নেতৃবৃন্দ বলেন,‘গোলাপ সাহেব মাদারীপুর-৩ নির্বাচনী এলাকার ২০ টি ইউনিয়ন থেকে ১৫০ থেকে ২০০ জন লোক কালকিনি উপজেলা চত্বরে নিয়ে এসে শো-ডাউন করেছে। তার সাথে কালকিনি ও ডাসার উপজেলার আওয়ামীলীগের কোন নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেনি। তার সবই লোকই ভাড়া করে আনা হয়েছে।’
মাদারীপুর উপজেলার মস্তফাপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান কুদ্দুস মল্লিক বলেন, ‘আমরা মাদারীপুর থেকে বাস ভাড়া করে লোক নিয়ে এসেছি গোলাপ ভাইর মনোনয়নপত্র জমা দিতে।’
উপজেলা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও কালকিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার দাস বলেন, আচারনবিধি মেনে চলার ব্যাপারে সচেষ্ট রয়েছি। আমি ৫ জন ব্যাতীত অন্যদের বের হয়ে যাওয়ার অনুরোধ করেছিলাম।
আচারনবিধি লঙ্ঘনের ব্যপারে আওয়ামীলীগ প্রার্থী আব্দুস সোবাহান গোলাপের মন্তব্য নেওয়ার জন্য তার গ্রামের বাড়ি কালকিনি উপজেলার রমজানপুর ইউনিয়নে গেলেও তিনি আচরণ বিধি নিয়ে কোন ধরনের মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।