প্রকাশ: ২২ মে ২০২৩, ১:২৭
বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে ঘিরে নগরীতে বহিরাগতদের আনাগোনা বেড়েছে। নির্বাচনের দিন এসকল বহিরাগতরা বিশেষ কোনো প্রার্থীর পক্ষে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পাঁয়তারা চালাতে পারে বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে বহিরাগত ঠেকাতে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ। ইতোমধ্যে তারা বহিরাগত ঠেকাতে পুলিশি নজরদারী বাড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন বিএমপি কমিশনার। এদিকে বহিরাগতদের আনাগোনা নিয়ে ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ নিয়ে শংকা প্রকাশ করেছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইকবাল হোসেন তাপসসহ অন্যান্য প্রার্থীরা। এছাড়া বরিশাল সিটি নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনে তার অপসারণের দাবি জানিয়েছেন জাপার মেয়র প্রার্থী।
সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল নগরীর কাউনিয়া, কাশিপুর, বৈদ্যপাড়া, চরের বাড়ি, সাগরদি, পলাশপুর, ধানগবেষনা সড়ক, রূপাতলী ও কেডিসিসহ একাধিক এলাকায় নির্বাচনের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে ওয়ার্ডে প্রভাব বিস্তারসহ শক্তি বৃদ্ধির জন্য রাজনৈতিক দলের নেতাদের সর্মথন নিয়ে গোটা এলাকা দাবড়িয়ে বেড়াচ্ছে বহিরাগতরা। এরা সিটি কর্পোরেশন নিবার্চনে ভাড়াটে বাহিনী হিসেবে মাঠে কাজ করবে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ওয়ার্ডের বাসিন্দরা জানান, হঠাৎ করেই বরিশাল নগরীতে গত এক সপ্তাহ ধরে বহিরাগতদের আনাগোনা বেড়ে গেছে। তাঁরা স্থানীয় প্রভাবশালী প্রার্থীর সঙ্গে প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছে। এর আগে এসব লোকদের কখনো দেখা যায়নি। বহিরাগতদের এমন আনাগোনায় এলাকাবাসীর মধ্যে চরম আতংক বিরাজ করছে।
১২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী আনোয়ার হোসেন রয়েল অভিযোগ করেন, এলাকায় নতুন লোকজনের আনাগোনা বেড়েছে। ২৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী রাইফুল আলম নোমান মল্লিক বলেন, জনসমর্থন যাদের পক্ষে নেই, তারা বহিরাগতদের ওপর নির্ভরশীল। আমার এলাকায় বহিরাগতদের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আরেক প্রার্থী বলেন, এদের মধ্যে অনেকেরই র্যাব- পুলিশের তালিকায় নাম রয়েছে। আশা করছি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বহিরাগতদের বিষয়ে কঠোর হবেন। ১০ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী এটিএম শহিদুল্লাহ বলেন, বহিরাগতদের নিয়ে আমি শঙ্কিত। তারা নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ বিনষ্ট করতে পারে। সম্প্রতি আমার এলাকার কলোনিতে বসবাসকারি ভোটারদের বাসায় বাসায় গিয়ে হুমকি ধামকি দেয়া হয়েছে। আশা করছি এদের বিরুদ্ধে প্রশাসন সতর্ক থাকবে।
জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইকবাল হোসেন তাপস বলেন, প্রতিদিন নগরীতে বহিরাগতের আনাগোনা বেড়েছে, তাদের আচার-আচরণও স্বাভাবিক নয়। এ নিয়ে নগরবাসী শংকিত রয়েছে জানিয়ে তিনি নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েতের দাবী জানান।
এদিকে রিটার্নিং কর্মকর্তার অপসারণ দাবি করে জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস বলেন, বরিশালে রিটার্নিং কর্মকর্তা একচোখা নীতি অনুসরণ করছেন। তিনি আমাদের কোন কথা শুনতে চান না। আমাদের অভিযোগ আমলে নেন না। তিনি একজন প্রার্থীর বিশেষ আত্মীয়। তার কোন ভুল তার চোখে পড়েনা। আমরা বার বার বলছি তিনি শুনছেন না। সোমবার নগরীর ১২ নং ওয়ার্ডের ভোটারদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, নির্বাচন কেন্দ্র করে বহিরাগতরা যাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য পুলিশ কঠোর অবস্থানে আছে। স্বাভাবিকের চেয়ে ১০-১২ প্লাটুন পুলিশের টহল বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। নগরের গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশ পথেও চেকপোস্ট থাকবে। এছাড়া আবাসিক হোটেল ও বাসাবাড়িতে বহিরাগতরা যাতে আশ্রয় নিতে না পারে, সেদিকেও লক্ষ্য রাখা হচ্ছে বলেন তিনি।