প্রকাশ: ১২ মে ২০২৩, ৩:৫৬
বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের এখনো বাকী ৩০ দিন। ভোটারদের মন জয় করতে এরই মধ্যে প্রচার প্রচারণায় ব্যস্ত রয়েছেন প্রার্থীরা। তফসিল ঘোষণার পর থেকে এ পর্যন্ত প্রচারণায় এগিয়ে আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত। পিছিয়ে নেই জাতীয় পার্টির লাঙলের প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইকবাল হোসেন তাপসও। তবে আওয়ামীলীগের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে রূপ নেয়া, জাতীয় পার্টি (জেপি) একাংশ নৌকাকে সমর্থন দেয়া, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ হেভিওয়েট প্রার্থী দেওয়া এবং সাবেক মেয়র বিএনপি নেতা আহসান হাবিব কামালের পুত্র কামরুল আহসান রুপন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় জটিল হচ্ছে ভোটের হিসেব নিকেশ। সাধারণ ভোটাররা মনে করছেন এ চার প্রার্থীর মধ্যেই শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। এখন পর্যন্ত মেয়র পদে নয় জনসহ ২১৬ জন প্রার্থী মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করলেও কেউ-ই তা দাখিল করেননি।
বিসিসি নির্বাচনে এবার সবচেয়ে বেশি আলোচিত পদটি মেয়রের। প্রার্থীরাও এবার শক্ত করে কোমর বেধেছেন। যে করেই হোক জয় তাদের চাই। আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি (জাপা), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মনোনীত প্রার্থীরা তো মাঠে আছেনই, আলোচনায় উঠে এসেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাবেক ছাত্রদল নেতা কামরুল আহসান রূপন। তবে আওয়ামীলীগের নৌকার প্রার্থী খোকন সেরনিয়াবাত মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকেই মাঠে রয়েছেন। প্রতিদিনই বিভিন্ন এলাকায় সাধারণ মানুষের সাথে কুশল বিনিময়ের পাশাপাশি নৌকার পক্ষে ভোট চাইছেন। তবে এখন পর্যন্ত তার সমর্থনে মাঠে কাজ করছেন প্রয়াত মেয়র শওকত হোসেন হিরন ও স্থানীয় এমপি পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্ণেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামীমের সমর্থরা। এদিকে মনোনয়ন বঞ্চনার পর বর্তমান মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ বরিশালে না এসে নৌকার পক্ষে কাজ করার জন্য তার অনুসারীদের নির্দেশনা দিলেও বাস্তবে তার কোন মিল পাওয়া যায়নি। অপরদিকে সাদিক অনুসারীরা নির্বাচনের মাঠে নামলে নৌকার পরাজয়ের আশংকা প্রকাশ করছেন খোকন সমর্থকরা। তবে গত ৪ বছরে বরিশাল সিটির ৩০টি ওয়ার্ডে আওয়ামীলীগের অবস্থান শক্তপোক্ত করেছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ। তার নিজস্ব একটা বড় বলয় রয়েছে দলটিতে। ফলে তৃণমূল আওয়ামীলীগের নেতাকর্মী ও সাধারণ ভোটাররা মনে করছেন সাদিক আবদুল্লাহ প্রত্যক্ষভাবে নির্বাচনের মাঠে না নামলে নৌকার বিজয় কঠিন হয়ে পড়বে।
এদিকে ১৪ দলীয় জোটের শরীক জাতীয় পার্টি (জেপি) বরিশাল জেলা ও মহানগর নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় করেছেন নৌকার প্রার্থী খোকন সেরনিয়াবাত। এ সময় আনুষ্ঠানিকভাবে জেপি নেতৃবৃন্দ নৌকার প্রার্থীকে সমর্থন দেন। জাতীয় পার্টি (জেপি) কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য ও বরিশাল মহানগর সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব জাকির হোসেন সুলতান ও জেপির বরিশাল মহানগর ও জেলার নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। তবে লাঙলের প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপসের দীর্ঘদিনের একটি পরিচিতি থাকায় এতে নির্বাচনে তেমন একটা প্রভাব পড়বে না বলে মনে করেন তাপসের সমর্থকরা। ইতিমধ্যে মাঠ পর্যায়ে লাঙলের পক্ষে জোয়ার সৃষ্টি হয়েছে বলেও দাবী তাদের। এছাড়া ইসলামী আন্দোলনের হাতপাখার প্রার্থী আওয়ামীলীগ ও বিএনপির একটি অংশের ভোটের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীর ভোটও তাদের পক্ষে যাবে বলে মনে করছেন। আর বিএনপি নির্বাচনে না এলেও প্রয়াত মেয়র বিএনপি নেতা আহসান হাবিব কামালের পুত্র সাবেক ছাত্রদল নেতা কামরুল আহসান রুপনও ভোটের মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়তে মাঠে নেমেছেন। এছাড়া অন্যান্য প্রার্থীদের মধ্যে এখনো আলোচনায় উঠে আসেনি কেউ।
প্রসঙ্গত: তফসিল অনুযায়ী নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ১৬ মে, বাছাই ১৮ মে। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল দায়েরের শেষ সময় ২১ মে। আপিল নিষ্পত্তির শেষ সময় ২৪ মে। প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৫ মে এবং প্রতীক বরাদ্দ ২৬ মে। ভোট গ্রহণ ১২ জুন।