প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২১, ১৭:২
মাঝে মাঝে চলন্ত বাস কিংবা ট্রাকে যৌন নির্যাতনে আলোড়িত হয় দেশ। গেলো বছর ২৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সিলেটে বোনের বাড়ি থেকে সুনামগঞ্জ ফেরার পথে এক কলেজছাত্রী বাস চালক ও তার সহকারীর হাতে ধর্ষণের শিকার হন। ভুক্তভোগীর পরিবার জানায়, মামলা তুলে নিতে আসামিরা বিভিন্নভাবে চাপ দিচ্ছে।
এদিকে সড়ক আইন পাসের ২ বছরেও কোনো চালকের ডোপ টেস্ট করাতে পারেনি সরকার। অথচ সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে ‘জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিল’ ১১১টি সুপারিশের অন্যতম ছিল এটি। পরিবহন বিশেষজ্ঞদের মতে, সড়কে মৃত্যুর মিছিল আর যৌন নির্যাতনের জন্য মাদকাসক্ত চালকরা অনেকাংশে দায়ী।
সড়কে চালকরা বেপরোয়াভাবে দাপিয়ে বেড়ালেও দেখার যেন কেউ নেই। আন্দোলনের মুখে ২০১৯ সালে নিরাপদ সড়ক আইন পাশের পর সবাই আশার আলো দেখে। কিন্তু আজও নৈরাজ্য থামেনি চালক-শ্রমিকদের।
এমনকি সুপারিশ অনুযায়ী আজ পর্যন্ত কেউ তাদের ডোপ টেস্ট করানোর মতো সাহসও দেখাতে পারেনি। এ নিয়ে দায়িত্বশীলরা একে অপরের ওপর দায় চাপাচ্ছেন।
বিআরটিএ’র পরিচালক (রোড সেফটি) শেখ মোহাম্মদ মাহবুব-ই-রব্বানী বলেন, এর কার্যক্রম আমরা হাতে নিয়েছি। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ করে নীতিমালা তৈরি এবং এর কার্যক্রম আমরা শুরু করতে পারব। এখানে অনেকগুলো বিষয় আছে। কোন কোন আওতায় কী কী টেস্ট করা হবে বা কোন ল্যাবে এসব টেস্ট করা যাবে তা কিন্তু নির্বাচন করতে হবে। এ কারণে একটু সময়ের প্রয়োজন হচ্ছে।
বাস মালিকরা বলছেন, চালক-শ্রমিকদের ডোপ টেস্টের দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে।
বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স এসোসিয়েশনের কার্যনির্বাহী পরিষদ সদস্য কাজী ফরিদুল হক হ্যাপি বলেন, লাইসেন্সের নবায়নেরও বিধান রয়েছে। সেখানে যদি সংযুক্ত করা দেয়া হয়, নবায়নের সময় এই টেস্টটি বিএরটিএ-ই করে নেবে। সেক্ষেত্রে আমাদের জন্য আরও সহজতর হবে বিষয়টি।
ডোপ টেস্ট করাতে রাজী না হলে চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন না করার পরামর্শ পরিবহন বিশেষজ্ঞদের।
বুয়েটের এআরআই’র পরিচালক ড. মো. হাদিউজ্জামান বলেন, ড্রাগ লাইজারের মতো ডিভাইস রয়েছে। যার মাধ্যমে তাৎক্ষণিক সময়ের মধ্যে জানতে পারেন একজন চালক সে শনাক্ত কিনা। হাইওয়ে বা ট্রাফিক পুলিশকে শুধু ডিভাইস দিলে হবে না, তাদের প্রশিক্ষণও দিতে হবে। বিশেষ করে মাদকদ্রব্যের মধ্যে অনেকগুলো শ্রেণি রয়েছে, মদ শনাক্তকরণ যতটা সহজ মাদকাসক্ত শনাক্তকরণ ততটা সহজ না।
ডোপ টেস্ট ছাড়া নিয়োগ দিলে পরিবহন মালিকদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া উচিত বলে মনে করেন ডক্টর হাদিউজ্জামান।