প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২৫, ১৬:৪৪
কোনো ট্যাগ পাওয়া যায়নি
বরিশালের বানারীপাড়ায় ৫০ শয্যাবিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি নানা সংকট ও অব্যবস্থাপনায় কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে। এ হাসপাতালের জনবল কাঠামো অনুযায়ী যেখানে ৩২ জন চিকিৎসক থাকার কথা, সেখানে বর্তমানে কর্মরত আছেন মাত্র ৮ জন মেডিকেল অফিসার। ফলে স্বাস্থ্যসেবার গুণগত মান নেমে গেছে আশঙ্কাজনকভাবে। অ্যানেস্থেসিয়া ও গাইনী চিকিৎসক না থাকায় গত ৯ মাস ধরে সিজারিয়ান অপারেশন সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রয়েছে, যার কারণে প্রসূতি রোগীদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, প্রসবজনিত জটিলতা দেখা দিলে রোগীদের ৩০ কিলোমিটার দূরে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কিংবা বেসরকারি ক্লিনিকে যেতে বাধ্য হতে হয়। এতে সময়, অর্থ এবং জীবন—তিনটিই ঝুঁকির মুখে পড়ছে।
হাসপাতালটিতে ২০১০ সালে ৫০ শয্যার অনুমোদন পেলেও এখনও চলছে ৩১ শয্যার পুরাতন জনবল কাঠামো নিয়ে। গত ১৫ বছরেও নতুন জনবল নিয়োগ না হওয়ায় সংকট দিন দিন ঘনীভূত হয়েছে। হাসপাতালের অ্যানেস্থেসিয়া, গাইনী, শিশু, মেডিসিন, চর্ম ও যৌন, অর্থোপেডিক্স, সার্জারি, হৃদরোগ, নাক-কান-গলা ও চক্ষু বিভাগে কোনো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই।
বানারীপাড়াসহ আশপাশের চারটি উপজেলার কয়েক লাখ মানুষের চিকিৎসার ভরসা এই একটি প্রতিষ্ঠান হলেও জনবল ও অবকাঠামো ঘাটতির কারণে সেই সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফকরুল ইসলাম মৃধা বলেন, মাত্র ৮ জন মেডিকেল অফিসার দিয়ে জরুরি, অন্তঃবিভাগ ও বহির্বিভাগ চালাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। একাধিকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হলেও কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি।
স্থানীয়দের দাবি, যেহেতু বানারীপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ইতিপূর্বে মাতৃসেবায় জাতীয় পুরস্কার পেয়েছে, তাই এখানকার সংকট দ্রুত নিরসনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হস্তক্ষেপ জরুরি।
অপর্যাপ্ত জনবল, সেবা বিঘ্ন এবং দীর্ঘদিনের অবহেলার ফলে বানারীপাড়ার এই স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানটি কার্যত অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। এখনই ব্যবস্থা না নিলে এই সংকট আরও ঘনীভূত হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।