প্রকাশ: ১ মার্চ ২০২১, ১০:৫০
ঢাকার ধামরাইয়ে চাচীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলার অভিযোগ উঠেছে উপজেলার সোমভাগ ইউনিয়নের ডাউটিয়া এলাকার মোঃ জুয়েল (২৮) ও জুয়েলের চাচী রূপালীর বিরুদ্ধে। গত বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) চাচী রূপালীকে (২২) নিয়ে কক্সবাজার ঘুরতে যায় জুয়েল। পরে রূপালীর স্বামী মোহাম্মদ আলী মন্ঠু তার স্ত্রীকে বিভিন্ন জাগায় খুঁজা-খুজির পর জানতে পারে তার ভাতিজা জুয়েলের সাথে কক্সবাজার চলে গেছে তার স্ত্রী ।
মোহাম্মদ আলী মন্ঠু ও জুয়েল সম্পর্কে চাচা ভাতিজা। অভিযুক্ত জুয়েল ধামরাই উপজেলার সোমভাগ ইউনিয়নের ডাউটিয়ার চৌড়াপাড়া গ্রামের কাবিলার ছেলে। রূপালী একই এলাকার মাবুল হোসেনের মেয়ে।
জানা যায়, রূপালী দুই সন্তানের জননী এবং জুয়েলও দুই সন্তানের জনক। এলাকাবাসী জানায়, ২০০৯ সালে দুই পরিবারের মাধ্যমেই রূপালীর বিয়ে হয় একই এলাকার মোহাম্মদ আলী মন্ঠুর সাথে। বিয়ের আগে থেকেই জুয়েলের সাথে রূপালীর প্রেমের সম্পর্ক ছিলো।
জুয়েলের পরিবার থেকে মেনে না নিয়ে জুয়েলের মা কৌশলে রূপালীকে তার দেবর মোহাম্মদ আলী মন্ঠুর সাথে বিয়ে দেয়। বিয়ের পরও গোপনে চলতে থাকে চাচী-ভাতিজার পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক। এ নিয়ে এলাকায় একাধিক বার বিচারও হয়েছে।
গত বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় রূপালীকে তার স্বামীর বাড়িতে না পাওয়ায় স্বামী আব্দুল আলীম স্থানীয়দের নিয়ে অনেক খুঁজা খুঁজি করে। পরের দিনও স্ত্রী রুপাললী বাড়িতে না আসায় তার স্বামী মন্ঠু ধামরাই থানায় স্ত্রী নিখুঁজ হওয়ার একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
কোথাও না পেয়ে জুয়েলের বাড়িতে গিয়ে জুয়েলেরও খুঁজ নেয়া হয়। জুয়েলকে বাড়িতে না পেলে সন্দেহ হয় রূপালীর স্বামীসহ স্থানীয় কয়েক জনের । পরে খুঁজ নিয়ে জানতে পারে জুয়েল ও রূপালী দুজনেই কক্সবাজার আছে। পরে গতকাল রাতে তাদের ঢাকা বিমানবন্দর থেকে ফিরিয়ে আনেন স্বজনরা। এ ঘটনায় এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যকর অবস্থা বিরাজ করছে।
রুপালীর স্বামী মোহাম্মদ আলী মন্ঠু বলেন, আমার স্ত্রীকে বাড়িতে না পেয়ে অনেক খোজাখুজি করি। জুয়েল এর বাড়িতেও খোঁজ নেই। না পেয়ে পরে থানায় গিয়ে একটি জিডি দায়ের করি। পরে জানতে পারি জুয়েল ও রূপালী কক্সবাজার আছে। গতকাল শনিবার জুয়েল ও রুপালিকে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে স্থানীয়দের সহায়তায় নিয়ে আসি। রুপালি তার বাবার বাড়িতে রয়েছে। এর একটি সঠিক মিমাংসা হওয়া দরকার। কারণ পূর্বেও তাদের নিয়ে অনেক ঘটনা ঘটেছে।
তিনি আরো বলেন, ২০০৯ সালে আমাদের বিয়ে হয়।ঘরে দুটি সন্তানও রয়েছে। কিন্তু জুয়েল এর প্ররোচনায় বার বার ঝামেলায় পড়তে হচ্ছে আমাকে। জুয়েলের উৎপাতে আমি এলাকা ছেড়ে কালামপুর গিয়ে বাসা নেই। কিন্তু সেখানেও জুয়েল ঝামেলা করেছে। আমি এর সঠিক বিচার চাই।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত রুপালি বলেন, জুয়েল বিয়ের আগে থেকেই আমাকে পছন্দ করে। কিছুদিন আগে আমার স্বামী সাথে আমার ঝগড়া হয় । তখন জুয়েল সান্তনা দেয়ার চেষ্টা করে এবং আমাকে জুয়েলের সাথে কোথাও থেকে ঘুরে আসতে বলে। জুয়েল আমাকে বলে তুই না গেলে তোকে মারবো আমি।
আমার স্বামীও অন্য মেয়েদের সাথে কথা বলে সেটা আমি দেখে ফেলি। এবং আমার খুব কষ্ট লাগে। পরে কষ্ট পেয়ে আমি জুয়েলের সাথে গেছিলাম। আমি জুয়েলের সাথে কথা বললেও আমি আমার স্বামীকে খুব ভালোবাসি।
জুয়েলের বাবা কাবিল উদ্দিন বলেন, ঘটনাটি খুবই লজ্জাজনক। বার-বার সাবধান করার পরও তারা এমন কাজ করেছে, এখন আমরা এলাকায় লজ্জায় মুখ দেখাতে পারি না। চাচীকে নিয়ে এমন ঘটনা ঘটাবে তা ভাবতেও পারি না। এখন এলাকার মানুষ যা ভালো মনে করে তাই করবে।
তবে জুয়েল এর মা নিজের ছেলের দোষ স্বীকার না করে মেয়েকেই এর জন্য দায়ী করে বলেন চাচী ভাতিজার মধ্যে এমন সম্পর্ক বলাও লজ্জার। আমার দেবর মন্ঠু আমাদের খুব সম্মান করে। এবিষয়ে জুয়েলের মুঠোফোনে ফোন দিলে সাংবাদিক পরিচয় দেয়ার পরই ফোনটি কেটে দিয়ে মোবাইল ফোন বন্ধ করে ফেলে।
রুপালির বাবা মাবুল বলেন, আমরা কিছুই বলবো না। আমাদের ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজাহার আলী যা করেন তাই। আমরা তার কাছে গিয়েছিলাম। তিনিই এটা দেখবেন। সোমভাগ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আজাহার আলী বলেন, আমার কাছে মেয়ে পক্ষ এসেছিল। তার পর আর এ নিয়ে কোন কথা হয় নি।