বাংলাদেশে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা গত সাত মাসে কমেছে প্রায় ১ কোটি ৩১ লাখ। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এর সর্বশেষ পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, জানুয়ারিতে দেশের মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ১১ কোটি ৬০ লাখ। এসময়ের মধ্যে, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে, কিন্তু মোবাইল ইন্টারনেট গ্রাহকদের হ্রাস একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে।
এই হ্রাসের কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা প্রধানত তিনটি বিষয় তুলে ধরেছেন। প্রথমত, চলতি অর্থবছরে সরকার সিমের ওপর কর ৫০ শতাংশ বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করেছে, যা মোবাইল গ্রাহকদের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে। দ্বিতীয়ত, মোবাইল অপারেটররা আর সিম বিক্রির জন্য আগের মতো ভর্তুকি দিচ্ছে না, এবং তৃতীয়ত, দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির অবনতি, যার ফলে গ্রাহকদের ক্রয়ক্ষমতা কমে গেছে।
এছাড়া, আগে মোবাইল অপারেটররা সিম বিক্রির জন্য প্রচুর ভর্তুকি দিয়ে সিম বিতরণ করত এবং এমনকি কিছু ক্ষেত্রে বিনামূল্যে সিম বিতরণ করা হতো। তবে সিমের ওপর কর বৃদ্ধি হওয়ার পর অপারেটররা তাদের ভর্তুকি ব্যয় কমিয়ে দিয়েছে, বিশেষত ছোট অপারেটররা, যেমন বাংলালিংক এবং রবি। বাংলালিংক এর করপোরেট প্রধান ও নিয়ন্ত্রক বিষয়ক কর্মকর্তা, তাইমুর রহমান বলেছেন, "কর বৃদ্ধি হওয়ার পর মোবাইল অপারেটরদের জন্য সিম বিক্রিতে ভর্তুকি দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। বড় অপারেটররা ভর্তুকি বহন করতে পারলেও ছোট অপারেটরদের জন্য এটি আরও চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে, যার কারণে বাজারে প্রতিযোগিতা ব্যাহত হচ্ছে।"
রবির করপোরেট প্রধান ও নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা শাহেদ আলম বলেন, "সিমের বাড়তি দামের কারণে গ্রাহকরা একাধিক সংযোগ কম ব্যবহার করছে, ফলে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা কমে যাচ্ছে।"
বিটিআরসির নিয়ম অনুযায়ী, ৯০ দিনের মধ্যে অন্তত একবার ইন্টারনেট ব্যবহার করলে তাকে সক্রিয় ইন্টারনেট গ্রাহক হিসেবে গণ্য করা হয়। গত জানুয়ারি পর্যন্ত মোট ইন্টারনেট ব্যবহারকারী সংখ্যা ১৩ কোটি ছাড়িয়ে গেছে, যার মধ্যে মোবাইল এবং ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট গ্রাহক অন্তর্ভুক্ত।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।