২০২৪ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) দেশগুলোতে বাংলাদেশি নাগরিকদের আশ্রয় আবেদনের রেকর্ড হয়েছে। তবে, এসব আবেদনগুলোর ৯৬ শতাংশেরও বেশি আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের আশ্রয় সংস্থা ইউরোপীয় ইউনিয়ন এজেন্সি ফর অ্যাসাইলামের (ইইউএএ) প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছর ইউরোপের ইইউ প্লাস দেশগুলোতে প্রায় ৪৩ হাজার ২৩৬ বাংলাদেশি নাগরিক আশ্রয় চেয়ে আবেদন করেছেন। এটি ইউরোপে একক কোনও দেশ থেকে আশ্রয় চাওয়া নাগরিকদের মধ্যে ষষ্ঠতম সর্বোচ্চ আবেদন।
ইইউএএ জানায়, ২০২৪ সালে ২৩ হাজার ৩ জন বাংলাদেশি আশ্রয়ের জন্য আবেদন করেছেন প্রথম ছয় মাসে, আর পরবর্তী ছয় মাসে আবেদন জমা পড়েছে ২০ হাজার ২৩৩টি। আগের বছর, ২০২৩ সালে প্রায় ৪০ হাজার ৩৩২ জন বাংলাদেশি ইউরোপে আশ্রয় চেয়ে আবেদন করেছিলেন। ২০২৪ সালে বাংলাদেশিদের আশ্রয় আবেদনের হার প্রায় ৭ দশমিক ২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে ২০২৩ সালের তুলনায়।
এ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ইউরোপের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশি আশ্রয় আবেদন জমা পড়েছে ইতালিতে। ২০২৪ সালে মোট ৩৩ হাজার ৪৫৫ বাংলাদেশি আশ্রয় চেয়ে ইতালিতে আবেদন করেছেন। এটি ২০২৩ সালের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, কারণ আগের বছর এটি ছিল ২৩ হাজার ৪৪৮। ফ্রান্স ও আয়ারল্যান্ডও ছিল বাংলাদেশিদের দ্বিতীয় ও তৃতীয় সর্বোচ্চ আবেদনকারী দেশ। ফ্রান্সে ২০২৪ সালে ৬ হাজার ৪২৯ বাংলাদেশি এবং আয়ারল্যান্ডে ১ হাজার ৬ জন বাংলাদেশি আশ্রয়ের জন্য আবেদন করেছেন।
ইইউএএ জানায়, ২০২৪ সালের মধ্যে বাংলাদেশিদের জন্য প্রায় ৪৭ হাজার ৭৭৮টি আশ্রয় আবেদন নিষ্পত্তির অপেক্ষায় ছিল। এছাড়া প্রায় ১ হাজার ৯৮৯ জন বাংলাদেশি তাদের আশ্রয় আবেদন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। ২০২৪ সালে বাংলাদেশিদের আশ্রয় আবেদনের স্বীকৃতির হার ছিল মাত্র ৩ দশমিক ৯ শতাংশ, যা আশঙ্কাজনকভাবে কম।
সর্বশেষ, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ইউরোপে আশ্রয় আবেদনের সংখ্যায় বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়। আফগানিস্তান ২০২৪ সালে ইউরোপে সর্বাধিক আবেদনকারী দেশ হিসেবে শীর্ষে রয়েছে, যেখানে প্রায় ৮৭ হাজার ৩৮২ আফগান নাগরিক আশ্রয় আবেদন করেছেন। পাকিস্তান ছিল তৃতীয় অবস্থানে, যেখানে প্রায় ২৩ হাজার ২৪০ পাকিস্তানি নাগরিক আশ্রয়ের জন্য আবেদন করেছিলেন।
ইইউএএ আরও জানায়, ২০২৪ সালে প্রাপ্ত আশ্রয় আবেদনগুলোর প্রায় অর্ধেক (৪৮ শতাংশ) নাগরিকত্বের জন্য ছিল, যার স্বীকৃতির হার ছিল ২০ শতাংশেরও কম। এসব আবেদনকারীদের মধ্যে বাংলাদেশি, মরোক্কান এবং তিউনিসিয়ানরা অন্যতম।
সূত্র: ইইউএএ।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।