ঢেঁড়স গাছের পাতায় সবুজ রঙের পোকা। এ পোকা আক্রমণ চালিয়ে ফলন নষ্ট করছে। শুধু তাই নয়, আক্রমণের কারণে ঢেঁড়স বড় না হয়ে ঢেঁড়স বাঁকা হয়ে যাচ্ছে। দিন দিন এমন অজ্ঞাত পোকার আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরের ঢেঁড়স চাষিরা। ফলে কপালে পড়েছে দুশ্চিন্তার ভাঁজ। এমন পরিস্থিতিতে চাষাবাদের খরচ তোলা কষ্টকর।
পোকার আক্রমণে ভুক্তভোগী উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের ঢেঁড়স চাষি আব্দুল বাছেদ। তিনি তার ২৪ শতাংশ জমিতে গত বছরের মতো এবারও উন্নত জাতের হাইব্রিড ঢেঁড়স চাষ করেছেন। তার মতে, ‘ফলন ভালো হয়েছে এবং ঢেঁড়স ধরেছে প্রচুর পরিমাণ। কিন্তু অজ্ঞাত পোকার আক্রমণে মারাত্মকভাবে ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে তাকে।
আব্দুল বাছেদ বলেন, ‘একদিন পর পর ৭০ থেকে ৮৫ কেজি ঢেঁড়স তোলা যায়। কিন্তু পোকার আক্রমণের কারণে ৮ থেকে ১০ কেজি ঢেঁড়স ফেলে দিতে হচ্ছে, যার বাজার মূল্য ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। অপরদিকে ঢেঁড়সের গায়ে প্রচুর পরিমাণে দাগ হচ্ছে। এতে করে পাইকারি ক্রেতারা মুখ ফিরিয়ে নেন। নানা ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করেও কার্যকর কোনো সুফল পাচ্ছি না।
একই গ্রামের ঢেঁড়স চাষি আব্দুল মহর বলেন, বাড়ির আঙিনায় ১০ শতাংশ জমিতে ২ হাজার ২০০ টাকা কেজি দরে বীজ কিনে ঢেঁড়স চাষ করেছি। গাছে পর্যাপ্ত পরিমাণ ঢেঁড়স আসলেও পোকার আক্রমণে ঢেঁড়সগুলো পরিপক্ক হচ্ছে না। বড় হওয়ার আগেই পোকার আক্রমণে ঢেঁড়স বাঁকা হয়ে যায়। এতে করে অনেক ঢেঁড়স নষ্ট হয়।
উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের সবজি চাষিদের ঢেঁড়স ক্ষেতে দেখা যায়, চাষিরা সকাল থেকে পোকা দমনে কীটনাশক ছাড়াও নানা ধরনের পোকা দমনে চাউলের কুড়া দিয়ে কীটনাশকের সঙ্গে মিশিয়ে ছিটিয়ে দিচ্ছেন, আবার কেউ আঁখের নালী ব্যবহার করছে, আবার কেউ কেউ চকের গুঁড়া পানির সঙ্গে মিছিয়ে ছিটিয়ে দিচ্ছেন ঢেঁড়স গাছের পাতায়।
ঢেঁড়স চাষি মজিবর রহমান বলেন, হাট-বাজারে সারের দোকানে গেলে দোকানিরা পোকা মারার যে বিষের বোতল দেয় সেগুলো দিয়েও কাজ হচ্ছে না। এসব বোতলের দামও ১৭০ থেকে ২১০ টাকা। দ্রুত সময়ের মধ্যে পোকা দমন করতে না পারলে চরম ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। পোকা দমনে সঠিক পরামর্শ পেলে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব বলে মনে করছি।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ ড. হুমায়ূন কবির জানান, উপজেলার কয়েড়া, নিকরাইল ও নলুয়া গ্রামে সবচেয়ে বেশি সবজি চাষাবাদ হয়ে থাকে। কৃষকরা একই জমিতে কয়েক জাতের সবজি চাষ করে। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ঢেঁড়স চাষ। তবে ঢেঁড়সে ইদানীং সবুজ রঙের পোকার সংক্রমণ দেখা যাচ্ছে। দিনের বেলায় মেঘাচ্ছন্ন আকাশ, প্রচণ্ড তাপমাত্রা ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে পোকার বংশবিস্তার দ্রুত গতিতে ছড়ায়। বৃষ্টি হলে আবহাওয়া অনুকূলে আসবে তখন পোকার বংশবিস্তার রোধ হবে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।